চট্টগ্রাম কারাগারে ৯০০ বন্দির বিক্ষোভ, বাইরে থেকে অস্ত্রধারীদের গুলি

কারারক্ষীদের মুহুর্মুহু গুলির পর ভেতরে ঢোকে সেনাসদস্যরা

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে একদিকে বন্দিদের বিক্ষোভ এবং অন্যদিকে কারারক্ষীদের মুহুর্মুহু গুলিতে ভেতরে-বাইরে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কারাগারের ভেতরে অন্তত ৯০০ বন্দি বিক্ষোভে অংশ নেয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় কারাবন্দিদের কেউ আহত হয়েছে কিনা, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম কারাগারে ৯০০ বন্দির বিক্ষোভ, বাইরে থেকে অস্ত্রধারীদের গুলি 1

ঘটনার সময় আমানত শাহ মাজার সংলগ্ন সড়কের দিক থেকে কারাগারের বাইরের দেয়াল ঘেঁষে প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে কয়েকজন যুবককে গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে, তবে অস্ত্রধারীদের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।

পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবির কয়েকটি টিম সেখানে গিয়ে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কারাগারের ভেতরে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। সেখানে বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি বন্দি রয়েছে।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুর পৌনে ২টা থেকে চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘি সংলগ্ন চট্টগ্রাম কারাগারে হঠাৎ বিক্ষোভ শুরু করেন কারাবন্দিদের কয়েকটি দল।
কারাগারের ভেতরের সাঙ্গু ভবনের দেয়ালের ইট খুঁড়ে সেগুলো গুঁড়ো করে কারারক্ষীদের দিকে ছুঁড়তে থাকে বন্দিরা। এর একপর্যায়ে তারা সাঙ্গু ভবনের দেয়ালসহ অনেক ভবন ও রুম লোহার গেইট ভাঙার চেষ্টা করে।

জানা গেছে, কারারক্ষীরা এ সময় পাগলাঘন্টা বাজান। তবে কারাবন্দিরা এ সময় আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে থাকেন। এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে কারারক্ষীদের মুহুর্মুহু গুলিতে কারাগারের ভেতরে ও বাইরে আতঙ্কজনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের সঙ্গে ছিল বিজিবি সদস্যদের কয়েকটি দলও।

জানা গেছে, কারাবন্দিদের তাণ্ডবে অনেকগুলো ভবনও রুমের ফটক নড়বড়ে হয়ে গেছে। ভেতরেও অনেক স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘তারা সেল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল। বিদ্রোহ দমনে ফাঁকা গুলি করা হয়েছে। খবর পেয়ে বিজিবি-সেনাবাহিনী এসেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।’

সি‌নিয়র জেল সুপার বলেন, ‘কারাবন্দিরা নিজস্ব হতাশা বোধ থেকে বিদ্রোহের চেষ্টা করেছে। অনেকেই জামিনে বেরিয়ে গেছে, তারা কেন পারছেন না—এই হতাশাবোধ বন্দিদের মাঝে কাজ করছে। কিন্তু সেটা তো আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়। আমরা বন্দিদের কাউন্সেলিং করার চেষ্টা করছি।’

আইএমই/আরএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm