ছাত্ররাজনীতি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম কলেজে বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদল নেতা শহীদ ওয়াসিমের নামে কলেজে গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থাপনার নামকরণের দাবিও জানান তারা।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটায় চট্টগ্রাম কলেজের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ইবনে হোসাইন।
লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ইবনে হোসাইন বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম আমাদের অধিকার ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে, যা আমরা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন নামে-বেনামে সক্রিয় কার্যক্রম চালাতে চেষ্টা করছে— যা আমাদের জন্য খুবই আশংকার বিষয়।’
তিবি বলেন, ‘সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় একটি ছাত্রসংগঠনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ অধ্যক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করার পর ক্যাম্পাসের বাইরে তাদের সঙ্গে ঝামেলার কথা আমরা শুনেছি। এভাবে বারবার ছাত্ররাজনীতি চালু করার চেষ্টা সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম আমাদের অধিকার ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে, যা আমরা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। আমরা ক্যাম্পাসে সংঘটিত এই সমস্ত কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানাই এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ ৫ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে— চট্টগ্রাম কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা, শহীদ ওয়াসিমের নামে কলেজের কোনো বিশেষ স্থাপনার নামকরণ এবং তার পরিবারের পুনর্বাসনে কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা রাখা, দ্রুত হল সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা, যারা পতিত স্বৈরাচারের অপকর্মের সাথে জড়িত ও জুলাই বিপ্লবে নির্যাতনকারী হিসেবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। জুলাই বিপ্লবে ক্ষতিগ্রস্ত, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার কলেজ প্রশাসন কর্তৃক বহন করা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে। মেয়েদের সঙ্গে ‘কথা বলা’র অভিযোগ এনে ধরে নিয়ে ছাত্রদলের অন্তত পাঁচজন নেতাকর্মীকে দুই দফায় মারধর করা হয়। শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও রামদা হাতে মারধরের পর আহতদের সিএনজিতে তুলে কলেজছাড়া করা হয়। হামলার সময় দুটি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি তানজীর হোসাইন জুয়েল এক বিবৃতিতে বলেছেন, চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
সিপি