চট্টগ্রাম কলেজে এক আবেগময় বিদায়ী বিকেল
চারদিকজুড়ে বৈশাখী রোদে ভেসে বেড়াচ্ছে একধরনের উষ্ণতা। গাছপালায় ঘেরা সবুজে মোড়ানো চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে একে একে প্রবেশ করছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আজকের সকালটা যেন অন্যসব দিনের চেয়ে আলাদা—চোখে রঙিন ভবিষ্যতের স্বপ্ন, মনজুড়ে বিষাদের ছায়া। পায়ে পায়ে এগিয়ে চলা যেন এক নীরব বিদায়ের যাত্রা। প্রিয় বন্ধু, ক্লাসরুম, বেঞ্চ, মাঠ আর প্রিয় শিক্ষকদের হাসিমুখ—সবকিছুর সঙ্গে যেন এক শেষবার দেখা হওয়ার অনুভূতি। দীর্ঘ এক অধ্যায়ের অন্তিম সূচনা।
এমন আবেগঘন দৃশ্যই ধরা পড়ে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদায়ী অনুষ্ঠানে।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে এক বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিদায় অনুষ্ঠান। এরপর কলেজ অডিটোরিয়ামে ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা সভা। দুপুর গড়াতেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা চলে সন্ধ্যা অবধি। অডিটোরিয়ামের জানালা পেরিয়ে গান-বাজনায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। ফাঁকে ফাঁকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্মৃতির ফ্রেম বন্দি করছেন ছবি তুলে। আড্ডায় উঠে আসছে চার বছরের নানা স্মৃতির গল্প।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কবির হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সুব্রত বিকাশ বড়ুয়া। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সহযোগী অধ্যাপক জেসমিন ফাতেমা চৌধুরী।
বিদায়ী শিক্ষার্থীরা বলেন, “এই ক্যাম্পাস আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে। ক্লাস শেষে আড্ডা, একসাথে বাড়ি ফেরা কিংবা শিক্ষকদের সঙ্গে মমতাভরা কথোপকথন—সব কিছুই মনে থাকবে আজীবন। শিক্ষকদের প্রতিটি উপদেশ আমাদের জীবনের পথচলায় দিশা হয়ে থাকবে।”
অতিথিরা বলেন, “তোমরা আমাদের সন্তানতুল্য। অনেকসময় তোমাদের ভালোর জন্য কঠোর হতে হয়েছে। কিন্তু আজ তোমাদের এই অর্জন আমাদের গর্বিত করে। আশা করি তোমরা কর্মজীবনে সাফল্য অর্জন করবে এবং চট্টগ্রাম কলেজের গৌরব বজায় রাখবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর নাহিদা আকতার, সহকারী অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ এমরান উদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক কাজী নাজমুন নাহার, প্রভাষক আরিফুর রহমান, মোহাম্মদ ইলিয়াস, মোহাম্মদ আবদুর রহিম ও ইফতেখারুল ইসলামসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
এদিন চট্টগ্রাম কলেজে বিকেলটা যেন একটু বেশি আবেগময়, একটু বেশি মনে রাখার মতো হয়ে উঠেছিল।
