আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ ফের জড়িয়েছে সংঘর্ষে। ‘সিনিয়রের’ ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করার অপরাধে সভাপতি গ্রুপের তিন ‘জুনিয়র’ ছাত্রকে মারধর করেছে সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের সমর্থকরা।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় তিন ছাত্রকে হোস্টেল গেটে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম। তবে সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেছেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ২০ সেপ্টেম্বরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে সবুজ গ্রুপের সাজ্জাদ আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কলেজের তিন শিক্ষার্থীকে বিকেল ৫টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে হোস্টেল গেটে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মেহেরাজ সিদ্দিকী পাভেল, ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ফয়সাল মাহমুদ মিনহাজ এবং ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাহেদ অভি। এর মধ্যে ফয়সাল মাহমুদ মিনহাজের পেটে ধারালো জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা জানান, মারধরের এই ঘটনায় সুভাষ মল্লিক সবুজের নেতৃত্বে সাজ্জাদ আব্দুল্লাহ, জিয়াউদ্দীন আরমান, মনির উদ্দিন রিহান, এহসানুল হক মিলন, জায়েদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, হৃদয়, মারুফ, শহীদ ওই তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। পরে তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তারা বাসায় ফিরেছেন।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, কলেজে আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে বারবার সাধারণ শিক্ষার্থী ও আমার কর্মীদের ওপর হামলা করে যাচ্ছে সাধারণ সম্পাদক সবুজের অনুসারীরা। সেই পরিক্রমায় আজ বিকাল ৪টার দিকে অভি, পাভেল, ফয়সাল মাহমুদ মিনহাজ নামে তিন কর্মীকে পিটিয়েছে সবুজের অনুসারী সাজ্জাদ আব্দুল্লাহ্, মনির রায়হান, আরমানসহ ১৫ জন।
তিনি অভিযোগ করেন, চকবাজার থানায় এই ঘটনায় মামলা করতে গেলেও মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কলেজে শেষ হয় ২ টায়, ৫টার দিকে কে কী করলো— সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমি এখনও পর্যন্ত কলেজে যাইওনি। আর কোন ঘটনা কখনও ছোট একটা কমেন্ট নিয়ে হয় না— এটা মনে রাখা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘তারা পকেটে অস্ত্র নিয়ে ঘোরে তখন কেউ নিউজ করতে আসে না। আমার গ্রুপে একজনের মাথা পাঠিয়ে দিয়ে কই আমি তো কাউকে অভিযোগ করতে যাইনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করেন আসলে ঘটনা কী হয়েছে আমি কিছু জানি না।’
চকবাজার থানার ওসি মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, ‘বিকেলে চট্টগ্রাম কলেজে হালকা গণ্ডগোল হয়েছে। পরিবেশ এখন স্বাভাবিক।’
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘কয়েকজন ছেলে এসেছিল, ঘুরে চলে গেছে। এই ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। তবে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়ে গেছে।’
আরএ/সিপি