চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার রেলপথে সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেস নামে দুই জোড়া ট্রেন চলাচলের সময়সূচি চূড়ান্ত করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ সূচি কার্যকর হবে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে দুই জোড়া ট্রেনের সময়সূচি জানানো হয়েছে।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) থেকে সৈকত এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৮২১) প্রতিদিন সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাবে। সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ট্রেনটি কক্সবাজার রেল স্টেশনে পৌঁছাবে। একই ট্রেন রাত ৮টা ১৫ মিনিটে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়বে। রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে পৌঁছাবে।
সৈকত এক্সপ্রেসে যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে।
এছাড়াও প্রবাল এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৮২২) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবে। চট্টগ্রামে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটি পৌঁছাবে। একই ট্রেনটি আবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার পৌঁছাবে।
পিএইচটি টাইপের কোচ দিয়ে ট্রেনগুলোর প্রতিটির আসন হবে অন্তত ৭৪৩টি।
প্রবাল এক্সপ্রেসটি যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশন। সপ্তাহের প্রতি সোমবার সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেসের চলাচল সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে।
এর আগে গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার রুটে নতুন করে সৈকত-প্রবাল এক্সপ্রেস নামে দুই জোড়া নতুন ট্রেন চালানোর অনুমোদন দেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা গেছে, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের পর এ পথে টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। ঢাকা থেকে দুটি সরাসরি ট্রেন থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে স্থায়ী কোনো ট্রেন ছিল না। একটি অস্থায়ী বিশেষ ট্রেন থাকায় আমরা ট্রেনটিকে প্রতিদিন উভয়মুখে ৪ বার চালানোর পরিকল্পনা করা হয়। পাশাপাশি আন্তঃনগর ট্রেনে রূপ দেওয়ার মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ হয়েছে। আপাতত লোডের সংখ্যা কম হলেও ভবিষ্যতে যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় ট্রেনের কোচ ও সেবা বাড়ানোর মাধ্যমে পর্যটন শহরগামী যাত্রীদের সেবা বাড়ানো হবে।
চলতি বছর ঈদুল ফিতরের সময় ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। চালু হওয়ার পর থেকেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেনটি। কিন্তু একপর্যায়ে গত ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে স্থানীয়দের চাপের মুখে সে অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। ঈদুল আযহার সময় ১২ জুন থেকে আবার চালু করা হয় বিশেষ ট্রেন, যা এখনও চলছে।
রেলওয়ে সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর পর চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ১০ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৩ জন। এত রেলের আয় হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৭২ কোটি টাকা আসে তিনটি নিয়মিত ট্রেন থেকে এবং বাকি টাকা বিশেষ ট্রেন থেকে। এর মধ্যে কক্সবাজার স্পেশাল ৯ ও ১০ ট্রেন নামে পরিচিত এই ট্রেন থেকে রেলওয়ের আয় হয়েছে দুই কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ টাকা। যাত্রী চড়েছেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৬২ জন।
ডিজে