৩ এপ্রিল ২০২০ থেকে ৭ আগস্ট ২০২১। চট্টগ্রামে প্রথম করোনা শনাক্তের দিন থেকে ৪৯২ দিনের মাথায় সেটি ছাড়িয়ে গেল ৯০ হাজারের ঘর। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৯৩৩ শনাক্ত নিয়ে এই ‘মাইলফলক’ অতিক্রম করলো চট্টগ্রাম। নতুনভাবে শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ৫১৯ জন নগরের এবং ৪১৪ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। তবে শনাক্ত হাজারের নিচে থাকলেও একদিনের ব্যবধানে আবারও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে মৃত্যু। করোনা কেড়ে নেওয়া ১৫ জনের মধ্যে ১০ জনই নগরের, বাকি ৫ জন উপজেলার।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত গিয়ে দাঁড়াল ৯০ হাজার ৫২১ জনে। এর মধ্যে নগরের ৬৬ হাজার ৮৯৪ জন এবং উপজেলা পর্যায়ে ২৩ হাজার ৬২৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ৫৯ জন। যাদের মধ্যে নগরের ৬২১ এবং উপজেলার বাসিন্দা ৪৩৮ জন।
রোববার (৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলার করোনা সম্পর্কিত এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, এদিন চট্টগ্রামের ১০টি ও কক্সবাজারের ১টি ল্যাবে এবং নগরের বিভিন্ন ল্যাবে এন্টিজেন টেস্টসহ ৩ হাজার ৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯৩৩ জন।
ল্যাবভিত্তিক ফলাফলে জানা যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৪১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২০২ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৭৩ জন নগরের এবং ১২৯ জন উপজেলার বাসিন্দা। ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৬০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ১৬৫ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ১০৪ জন নগরের বাসিন্দা এবং ৬১ জন বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৬০৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ১১২ জন ও উপজেলার ৪৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়।
এছাড়া, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৫ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৮ জন নগরের এবং ৮৭ জন উপজেলার অধিবাসী।
অন্যদিকে, এদিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে ৬৩৭ জনের এন্টিজেন টেস্ট করানো হয়। এর মধ্যে ১৩৮ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৭৪ জন নগরের এবং ৬৪ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ২ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে উপজেলার ১ জনের নমুনায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
নগরীর বেসরকারি ল্যাবগুলোর মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে এদিন কোন নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ২৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭২ জনকে করোনারোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। যাদের মধ্যে ৬০ জন নগরের, ১২ জন বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ১৫ জনের ও উপজেলার ২ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ১৭ জন ও উপজেলার ৪ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ১২৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৩ জনের দেহে করোনার বিষ পাওয়া গেছে। যাদের ৫৪ জনই নগরের, বাকি ৯ জন উপজেলার।
সিভিল সার্জন আরও জানান উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগীর খোঁজ মিলে রাঙ্গুনিয়াতে। সেখানে করোনা শনাক্ত হয় ৮০ জন। এছাড়া, আগেরদিন শীর্ষে থাকা হাটহাজারীতে ৭১ জন, রাউজানে ৬৯ জন, বোয়ালখালীতে ৫৭ জন, সাতকানিয়ায় ৩৭ জন, সীতাকুণ্ড ও চন্দনাইশে ১৮ জন করে, ফটিকছড়ি ও আনোয়ারায় ১৫ জন করে, লোহাগাড়ায় ১১ জন, বাঁশখালীতে ১০ জন, মিরসরাইয়ে ৭ জন, পটিয়া ও সন্দ্বীপে ৩ জন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এমএহক