৩০টি স্কুলের সহস্রাধিক বিতার্কিক, শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরিচিত ব্যক্তিত্বের কোলাহলে চট্টগ্রামে উদ্বোধন হল বাংলাদেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘রবি-দৃষ্টি ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপ’। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সাংগঠনিক বিতর্ক আয়োজনের ৩০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে।
রবি দৃষ্টি বিতর্ক প্রতিযোগিতার এবারের স্কুল বিতর্কের ২৮তম এই আয়োজনে চট্টগ্রামের ৩০টি স্কুল, ১৭তম বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কে সারা দেশের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করছে। দেশের বৃহত্তম এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী হবে ১২ নভেম্বর।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন উদ্বোধন স্মারক পাঠ করার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন উন্মোচন করেন।
এর পরপরই চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও ভিন্ন ধারার সাংস্কৃতিক আয়োজন, আঞ্চলিক গানের সাথে অপূর্ব নৃত্য ও অসাধারণ গানে বিমোহিত হয় আগত দর্শক ও শিক্ষার্থীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিতার্কিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ডা. আবদুন নূর তুষার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের নির্বাহী প্রযোজক ইলন শফির, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত কালাষ্টার পরিচালক আশরাফুল কবির রিয়াদ।
দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুলের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি সাইফ চৌধুরী। এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রাক্তন সভাপতি কসশাফুল হক শেহজাদ, সহ সভাপতি বনকুসুম বড়ুয়া নুপুর, মুজিবুর রহমান মনি ও সাবের শাহ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্না, যুগ্ম সম্পাদক কাজী আরফাত, রিদোয়ান আলম আদনান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্না মজুমদার।
উদ্বোধনের পরপরই দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নানকে অভিনন্দন জানিয়ে ক্রেষ্ট ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিতার্কিক ডা. আবদুন নুর তুষার।
প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করতে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আগামী প্রজন্মের পথ প্রদর্শক হবে আজকের বিতার্কিকরাই, এরা সবাই যুক্তিবাদী এবং যুক্তির তীক্ষণতাই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রত্যেক মানুষেরই মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভার উন্মেষ ও বিকাশ সাধনের জন্য আমাদের নিজেদের মুক্ত বুদ্ধির চর্চা করতে হবে, মূলধারা সৃজনশীলতার সাথে থাকতে হবে এবং এভাবেই নির্মিত হবে আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ এবং স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও প্রাক্তন বিতার্কিক ডা. আবদুন নুর তুষার বলেন, ‘দৃষ্টির অনুষ্ঠানে আসলে আমার স্মৃতির পট উন্মোচিত হয়। আমার কাছে মনে হয় গতকালই তো ছিলো সব। কিন্তু এখানে আসলে মনে হয় অনেক দিন হয়ে গেছে প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেছে আমাদের বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের। এই মূলধারার বিতর্ক ও সৃজনশীলতার চর্চায় চট্টগ্রামসহ পুরো বাংলাদেশের দৃষ্টি একটি অন্যতম নাম।
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আশরাফুল কবির রিয়াদ বলেন, ‘যে গান গাইতে জানে সে খারাপ মানুষ হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি এই স্বপ্নবাজ তরুণেরা নিজেদের প্রতিভায় বিকশিত হওয়ার মাধ্যমে এ দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।তিনি বলেন, শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় তোমাদের সাথেই থাকবে, তোমাদের অগ্রযাত্রা দেখে আমরা উল্লসিত হবো, উদ্ভাসিত হবো।’
দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল বলেন, ‘এই প্রজন্মের শিক্ষার্থী অনেক বেশী মেধাবী, দক্ষ, যুক্তি নির্ভর। তিনি বলেন, যদি আমরা চট্টগ্রামকে নিয়ে কিছু করি সেটা হবে বাংলাদেশের অর্জন।’
সভাপতির বক্তব্যে দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি সাইফ চৌধুরী বলেন, ‘দৃষ্টি চট্টগ্রাম ৩০ বছর ধরে স্বপ্ন দেখেছে এবং স্বপ্নের ফেরিওয়ালার মতো সবার কাছে সৃজনশীলতা ও মুক্ত বুদ্ধির চর্চার বাণী পৌঁছে দিচ্ছে। কারণ দৃষ্টি শিক্ষা প্রগতি ও যুক্তিতে বিশ্বাস করে।’