চট্টগ্রামে ৫০০ সিসির রয়েল এনফিল্ড বাইক বানাতে ৩০ একরের কারখানা

ক্রমেই বাড়ছে মোটরসাইকেলের চাহিদা। প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে এতোদিন মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনক্ষমতা বা সিসি (সেন্টিমিটার কিউব) নিয়ে বিধিনিষেধ থাকলেও নতুন আমদানি নীতি আদেশে সেই বাধাও উঠে যাচ্ছে। ফলে এখন থেকে ৫০০ সিসির (ইঞ্জিনক্ষমতা) উচ্চ সক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেলের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আমদানি কিংবা সংযোজন ছাড়াও বাজারজাতও করা যাবে। আর দেশে প্রথমবারের মতো ৫০০ সিসির মোটরসাইকেল তৈরি হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামেই।

চট্টগ্রামে ৫০০ সিসির রয়েল এনফিল্ড বাইক বানাতে ৩০ একরের কারখানা 1

রোববার (২৪ এপ্রিল) জারি করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত আমদানি নীতি আদেশে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান ৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারবে।

বাংলাদেশে এর আগে শুধু ১৬৫ সিসি সক্ষমতার মোটরসাইকেল আমদানি, উৎপাদন ও বাজারজাত করার অনুমোদন ছিল। এর বেশি সব ধরনের মোটরসাইকেল আমদানি ছিল নিষিদ্ধ।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড রয়েল এনফিল্ড ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে উৎপাদন ও বাজারজাত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। রয়েল এনফিল্ডের সঙ্গে ইফাদ মোটরসের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে ইতিমধ্যে। মিরসরাইয়ে মোটরসাইকেল কারখানা স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে ৩০ একর জমি বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। ওই কারখানায় তৈরি হবে রয়েল এনফিল্ডের ৩৫০ থেকে ৫০০ সিসির উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল।

২০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত বাংলাদেশে মোটরবাইকের ওপর ইঞ্জিন ধারণক্ষমতা নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। কিন্তু এরপর সরকার হঠাৎ করেই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের ধারণক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করে দেয় ১৫০ সিসি পর্যন্ত। বিআরটিএ ২০০০ সাল থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি বন্ধ করে দেয়। তখন এ নিয়ে যুক্তি দেখানো হয় যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের ধাওয়া করে তাদের শক্তিশালী দ্রুত মোটরসাইকেলের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। যদিও এরকম কোনো উদাহরণ দেখাও যায়নি।

বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ধারণক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অথচ বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের কারণে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেলগুলো রাস্তায় নিরাপদ।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল শিল্পে প্রায় আট হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দেখেছে। চার বছর আগে সরকার মোটরবাইকের স্থানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পলিসি বেনিফিট চালু করার পর থেকে বাইকের দাম প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে।

বছরে এখন ৫ লাখেরও বেশি মোটরবাইক বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশে। ২০১৬ সালে বিক্রির এই পরিমাণ ছিল দুই লাখেরও কম।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!