জন্মদিন, বিয়ে বা নানা সামাজিকতায় কেক বা কুকিং আইটেমের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে ভিন্নমাত্রা এনে দেয়। আর সেই কেকগুলো যদি তৈরি হয় নতুন ডিজাইন ও নকশায় তাহলে সেটি সবার নজর কাড়ে। এমন নকশায় কেক তৈরি করতে চট্টগ্রামের এক ঝাঁক নারীরা নিজেকে সাবলম্বী করতে উদ্যোক্তা হয়েছেন। তারা ঘরে বসেই বানাচ্ছেন এসব কেক ও বেকারি কুকিং পণ্য। থেকেই তৈরি হবে বিশ্বমানের কেক, বেকারি এবং কুকিং আইটেম- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে
এসব ঘরে বানানো কেক ও বেকারি পণ্য ক্রেতার সামনে নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা। এ উপলক্ষে নগরীর নাসিরাবাদের টেরাকোটা রেস্টুরেন্টে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী ‘হোম শেফ ফুড ফেস্ট’।
প্রদর্শনীতে দারুণ ডিজাইনের সব কেক, বেকারি এবং কুকিং আইটেম নিয়ে ২৭ জন অনলাইন উদ্যোক্তা অংশ নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ ফুড ফেস্টের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সংসার সামলানোর পাশাপাশি নারীরা আজ সাবলম্বী হওয়ার নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে চলেছেন। নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সাসটেইনেবল ডেভেলমেন্ট গোল (এসডিজি) অর্জন করতে হলে নারীদেরকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নারীদেরকে দেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। যিনি সংসার পরিচালনা করেন একান্ত উদ্যোগে তিনিই আবার হয়ে উঠতে পারেন পরিবারের উন্নতির একজন নিয়ামক। ঘরে বসে নিজ হাতে কেক ও পেস্ট্রি তৈরি করে তা বাজারজাতকরণের মধ্যদিয়ে নিজেদেরকে সাবলম্বী করার স্বপ্ন দেখছেন এক ঝাঁক নারী। এমন উদ্যোগে আমাদেরকেও নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’
আয়োজকরা ইচ্ছা করলে আগামীতে এ ফুড ফেস্ট আয়োজনের ভেন্যু হিসেবে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামকে ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রদর্শনীর বিচারক হিসেবে রয়েছেন আইসিআই’র পরিচালক মাস্টারশেফ ড্যানিয়েল গোমেজ। তিনি বলেন, ‘ঢাকাতেও এ ধরনের কেক ও পেস্ট্রি ফেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ মেলাতে অংশগ্রহণকারী নারীরা দারুণ সব ডিজাইনের কেক তৈরি করেছেন। স্বাদেও সেগুলো অতুলনীয়। প্রদর্শনীর অধিকাংশ কেক ও পেস্ট্রি গুণগতভাবে আন্তর্জাতিক মানের। চট্টগ্রামের নারীদের এমন কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়।’
অনুষ্ঠানের আয়োজক ‘ইসরাত বেকিং বাই রোমানা’র স্বত্বাধিকারী ডা. উম্মে রুমানা শারমীন বলেন, ‘চিকিৎসা পেশার ব্যস্ততায় যখন হাঁপিয়ে উঠেছি তখন আমার ভেতর ছোটবেলার একটি নেশা আনন্দ-বিনোদনের বিষয় হয়ে ওঠে। সেটি হচ্ছে বেকিং ফুড। নিজের হাতে কেক ও পেস্ট্রিসহ বেকিং দুনিয়ার নানান খাদ্য বানানোতে আমার চিরকালের দুর্বলতা।’
তিনি বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে আমি কেক বানানোর ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ি। এক পর্যায়ে আমি অনেক উৎসাহী নারীদেরকে প্রশিক্ষণ দিই। বাংলাদেশ, ভারত, জাপান, চীন এমনকি লন্ডন থেকেও অনেকেই অনলাইনে আমার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রায় ৮ বছর ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার নারী অনলাইনে এক ছাতার নিচে দাঁড়িয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন চিটাগাং কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাজ্জাদ, শেফ মেটিউস রোজারিও, শেফ রাজু ইবেন গমেজ এবং শেফ রিচার্ড, সাংবাদিক আলমগীর সবুজ, রুবেল খান, এসএস ওয়ার্ল্ড’র সিইও মুহাম্মদ সিরাজ উদ দৌল্লাহ।