চট্টগ্রামে শ্রমিক লীগ নেতার বাড়িতে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের রাত্রিযাপন, আড়ালে দুই সামশুর অন্য অভিলাষ
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন শ্রমিক লীগের এক শীর্ষ নেতার বাসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের রাত কাটানো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বড় একটি বহর নিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নে উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি সামশুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে যান। ওই শ্রমিক লীগ নেতার বাড়িতে রাত্রিযাপন করে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

সামশুল ইসলাম ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে পটিয়ায় বিএনপি অফিসে হামলার অন্যতম এজাহারভুক্ত আসামি। তার বড় ছেলে হাবিবুল ইসলাম সাকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসনাত আবদুল্লাহর সহপাঠী বলে জানা গেছে।

এদিকে মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকার একটি ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ককে নিয়ে এসে শোডাউন দেওয়া হয়েছে— এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নে ৭টি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফার্নেস অয়েলের একমাত্র সরবরাহকারী শ্রমিক লীগ সভাপতি সামশুল ইসলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে সাবেক সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে মিলে এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন তিনি। এই সাতটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফার্নেস অয়েল সরবরাহ করে প্রতি মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আয় করেন তারা। অন্যদিকে ফার্নেস অয়েল বা পোড়া তেলের পাশাপাশি এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভালো তেলও তারা বাইরে নিয়ে আসেন— এমন অভিযোগও কেউ কেউ করে থাকেন।
আওয়ামী লীগের মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী সংসদ সদস্য হওয়ার পর সামশুলের কাছ থেকে ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও বিফল হন তিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর ব্যবসাটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনামের অনুসারীরা। তবে কয়েকদিন আগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর দুই সামশু— সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও শ্রমিক লীগ সভাপতি সামশুল ইসলাম পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে পটিয়ায় নিয়ে এসে শোডাউন দেন— এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের অনেকে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সিপি