ফ্যাক্টচেক/ চট্টগ্রামে শীর্ষ সমন্বয়কের ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, ‘দরকষাকষি’র সোয়া ৬ মিনিট

কণ্ঠস্বর যাচাইয়ে এআই ডিপফেইক ডিটেক্টর

চট্টগ্রামে মেলার আয়োজন করতে যাওয়া এক নারী উদ্যোক্তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এক সমন্বয়কের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ৬ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ার পর পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনার ঝড় উঠেছে। রিজাউর রহমান নামের ওই সমন্বয়ক অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক আরেক শীর্ষ সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

YouTube video

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে মেলার আয়োজন করে ‘চট্টগ্রাম অন্ট্রাপ্রেনর ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন। মেলা শুরুর দুদিন আগে সংস্থাটির উদ্যোক্তা আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলার আয়োজন বন্ধ করতে বলা হয়। এরপরই ওই নারী উদ্যোক্তা ধরনা দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সমন্বয়ক রিজাউর রহমানের কাছে। এ সময় সবাইকে ‘ম্যানেজ’ করার বিনিময়ে রিজাউর তার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত আরেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের বাধায় মেলাটি আর মাঠে গড়াতে পারেনি।

ডিপফেইক অডিও বা ভয়েস শনাক্ত করে— এমন আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করেও কলরেকর্ডটি যাচাই করেছে  চট্টগ্রাম প্রতিদিন।
ডিপফেইক অডিও বা ভয়েস শনাক্ত করে— এমন আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করেও কলরেকর্ডটি যাচাই করেছে চট্টগ্রাম প্রতিদিন।

‘ক্লোজ’ ছোট ভাইয়ের সঙ্গে সোয়া ৬ মিনিট

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৬ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ডে শোনা যায়, সমন্বয়ক রিজাউর রহমান কথা বলছেন নারী উদ্যোক্তা আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার এক ‘ক্লোজ ছোট ভাইয়ের’ সঙ্গে। তবে কথোপকথনের একপর্যায়ে তাতে অংশ নেন পূর্ণিমা নিজেও। রিজাউরকে সেখানে বলতে শোনা যায়, এক ‘বড় ভাইকে’ ১০ লাখ টাকা দিলেই সবাইকে ম্যানেজ করে মেলা আয়োজন সম্ভব।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে রিজাউরের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, কলরেকর্ডে শোনা কণ্ঠটি তারই। ডিপফেইক অডিও বা ভয়েস শনাক্ত করে— এমন আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করেও চট্টগ্রাম প্রতিদিন কলরেকর্ডটি সত্যিকারের বলে প্রমাণ পেয়েছে। এছাড়া শীর্ষস্থানীয় দুজন ফ্যাক্টচেকারও একই মত দিয়েছেন।

জানা গেছে, ফাঁস হওয়া কলরেকর্ডে সমন্বয়ক রিজাউর যার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তিনি হলেন যুবদল নেতা ইমাম হোসেন আবির। মেলা আয়োজনকারী সংস্থা ‘চট্টগ্রাম অন্ট্রাপ্রেনর ফোরামের’ প্রধান উদ্যোক্তা আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার পক্ষে তার এই ‘ক্লোজ ছোট ভাই’ রিজাউরের সঙ্গে একটি ‘ডিল’ করতে চাইছিলেন, যেন মেলা আয়োজনে সমস্যা না হয়।

আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমা ‘চট্টগ্রাম অন্ট্রাপ্রেনর ফোরামের’ ব্যানারে চান্দগাঁও থানা এলাকায় প্রতিবছরই মেলার আয়োজন করেন। যা স্থানীয়ভাবে ‘পূর্ণিমার মেলা’ হিসেবেই পরিচিত। এবারও তিনি এক লাখ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মেলাটির আয়োজনের উদ্যোগ নেন। ২০ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলাটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উদ্যোক্তার আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়ার পর মেলাটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ঘনিষ্ঠ। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা তার স্বামীর বড় বোন। আবার বিভিন্ন সময়ে পূর্ণিমার মেলার অর্থের যোগানদাতা হিসেবে নগর ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক আবু নেছার চৌধুরী আজাদের স্ত্রী সোনিয়া আজাদের নামও শোনা গেছে।

আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন সমন্বয়কদের একটি অংশ।
আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন সমন্বয়কদের একটি অংশ।

কী আছে ‘দরকষাকষি’র কলরেকর্ডে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও কলরেকর্ডের শুরুতেই যুবদল নেতা আবিরকে সমন্বয়ক রিজাউর বলেন, ‘আমি হচ্ছে যে, বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলছি বুঝছেন। এখন হচ্ছে যে উনি পুরা বিষয়টা ওভারলুক করে আমাকে একটা অ্যামাউন্ট বলছে। তো লাখ দশেকের কথা বললো। যেটা হইলে সবাইকে ম্যানেজ করে জিনিসটা ওকে করে দিবে আরকি।’

উত্তরে আবির তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কত বলতেছে যে?’ রেজাউর আবার জবাব দেন, ‘লাখ দশেকের মতো বলতেছে।’ বিস্মিত হয়ে আবির আবারও রেজাউরকে প্রশ্ন করেন, ‘কতো বলছে?’ রেজাউর বলেন, ‘টেন-এর কথা বলছে।’

১০ লাখ টাকার কথা শুনে আবির বলেন, ‘কী বলো? ওখানে পাঁচ হাজার টাকা করে ৫০টা হবে না (দোকান)… মাঠের তিনভাগের একভাগ। দশ লাখ টাকা কোত্থেকে দেবে রেজা বলো?’

বড় ভাইয়ের বরাত টেনে রেজাউর বলেন, ‘না আমি তো হচ্ছে আপনাদের অ্যামাউন্টটা কতো জানি না। পার স্টল (দোকানপ্রতি) কতো জানি না। এই জিনিসগুলা তো আমি জানি না। উনি (বড় ভাই) আইডিয়া করতেছে আর কী। ৬ দিনের একটা হিসেব করে উনি জিনিসটা এভাবে বলতেছে আর কী।’

আগের অভিজ্ঞতা থেকে দোকানপ্রতি ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা করে নেওয়া হয় জানিয়ে আবির বলেন, ‘তুমি হিসেব করো ৮ হাজার টাকা করে হলেও ৫০টা স্টল কত হতে পারে? তুমি ৮ হাজার টাকা করে ৫০টা মারো (হিসেব) কতো?’ কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে অপরপ্রান্ত থেকে উত্তর আসে, ‘হুম, চার লাখ।’

আবির বলেন, ‘এর মধ্যে তোমার মাঠ একলাখ। তারপরে ডেকোরেশন দেড় লাখ। ইভেন্ট একলাখ। এবার বলো?’ রেজাউর বলেন, ‘আমি তো ওই হিসেবটা জানি না। ওনাকেও আমি ওই হিসেবটা বলি নাই। আমি জানলে তো বলতে পারবো।’

একপর্যায়ে রেজাউর জিজ্ঞেস করেন, ‘এমনিতে আপনি হচ্ছে যে কত পারবেন বিষয়টা? আপনি একটা বললে আমি ওনাকে (বড় ভাই) আইডিয়াটা দিতে পারবো আর কী।’

উত্তরে আবির বলেন, ‘এখন রেজা, তোমাকে তো খুলে বললাম, দেখো তুমি তোমার মতো করে।’ রেজাউর বলেন, ‘ভাইয়া আমার মনে হয় হচ্ছে যে, আপনি আমাকে আনুমানিক একটা অ্যামাউন্ট বললে আপনারটাই আমি ডেলিভার করতে পারি আর কি!’

আবির লাখখানেক টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে রেজাউর তাকে বলেন, ‘আচ্ছা আমি এটা ডেলিভার করে দিচ্ছি’। আবির উত্তরে বলেন, ‘লাভেরটা সহ ইয়ে সহ… রেজা দেখ, শুধুমাত্র ওনার (উদ্যোক্তা পূর্ণিমা) একটা আত্মসম্মান এবং ফেয়ারটা করা। তুমি যদি আর বেশি কিছু না… একটা আত্মসম্মান নিয়ে দাঁড়াইছে।’

জবাবে সায় দিয়ে রিজাউর বলেন, ‘আমি বুঝতেছি তো ভাইয়া। এটা যদি বন্ধ হয় তাইলে এই নামটারও যে রেপুটেশন যেটা ছিল সেটায় বিশাল বড় আঘাত আসবে।’

কথোপকথনের একপর্যায়ে মেলার আয়োজক আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমা পাশ থেকে রিজাউরকে বলেন, ‘আমার কোনো ব্যাংক ব্যালেন্স নাই, ঠিকাছে? মেলা থেকে তুলে আমি মেলাতেই কাজ করি। এক মেলা থেকে আরেক মেলায় আমার কাছে টাকা থাকে না।’ এরপরই রিজাউর রাতের মধ্যে সেই বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানানোর আশ্বাস দেন।

কাশবন রেস্তোঁরায় বৈঠক হয়েছিল রাতে

ফোনে কথোপকথনের আগেও সমন্বয়ক রিজাউর মেলা আয়োজনের ‘ঠিকাদারি’ নিতে নারী উদ্যোক্তা আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার সঙ্গে বহদ্দারহাটের কাশবন রেস্তোঁরায় একদফা বৈঠক করেন। চট্টগ্রাম প্রতিদিন এর কিছু তথ্য-প্রমাণও জোগাড় করেছে। রেস্তোঁরার সেই বৈঠকে উপস্থিত একজনসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিনজন সক্রিয় কর্মীর সঙ্গে কথাও বলেছে চট্টগ্রাম প্রতিদিন। পুরো বিষয়টিই শুরু থেকে জানতেন— চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পূর্ণিমা নামের ওই আপু মেলার আয়োজন করছিলেন সিডিএ কলেজের মাঠে। সমন্বয়কদের একটা গ্রুপে তার সঙ্গে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে ছবি চলে যায়। এরপর সেটি বন্ধে প্রশাসনকে চাপ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী মেলা না করতে প্রশাসন পূর্ণিমা আপুকে নির্দেশ দেয়। তিনি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পারমিশনও পাননি। তখন মেলার আর দুদিন বাকি। আপুর এক পরিচিত ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে তিনি সমন্বয়ক রিজাউরের খোঁজ পান।’

বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘১৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় আপু রিজাউরের সাথে বহদ্দারহাটের কাশবন রেস্তোঁরায় দেখা করেন। এ সময় রিজাউরের সাথে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল। রেস্তোঁরায় বসেই রিজাউর ফোন করেন নগর পুলিশের বিশেষ শাখার ডিসি (উপ-কমিশনার) মোখলেছ ভাইকে। তিনি বোধহয় ২১ ডিসেম্বরের কথা বলেছে। কিন্তু আপুর ২০ ডিসেম্বর মেলা শুরু করার কথা। এরপর নিবরাস নামে এক ছেলেকে থানায় পাঠায় রিজাউর। আর রাতের মধ্যে জানানোর আশ্বাস দেয়। এরপর পূর্ণিমা আপুর এক ভাই তার গাড়িতে করে রিজাউরকে নামিয়ে দিয়ে আসে।’

জানা গেছে, ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বাসায় গিয়ে আবিরকে ফোন করেন রিজাউর। ওই সময় আবিরের পাশে মেলার আয়োজক পূর্ণিমাও ছিলেন।

কলরেকর্ড আসল, নাকি নকল?

এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে মেলার আয়োজক এবং ‘চট্টগ্রাম অন্ট্রাপ্রেনর ফোরামে’র উদ্যোক্তা আফরোজা সুলতানা পূর্ণিমার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। তবে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে অপরপ্রান্তের কণ্ঠটি যুবদল নেতা ইমাম হোসেন আবিরের ছিল বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

অডিও রেকর্ডটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) জেনারেটেড কিনা— জানতে চাইলে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দীন শিশির বলেন, ‘অডিওটি এআই জেনারেটেড—এমন কোনো প্রমাণ আমি পাইনি।’

ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ‘ফ্যাক্টওয়াচ’ এর ফ্যাক্টচেকার রিদওয়ান ইসলাম ভাইরাল অডিওটি ‘আসল’ বলে নিশ্চিত করেছেন। রিদওয়ান বলেন, ‘অডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরির সম্ভাবনা কম। কৃত্রিম বুদ্ধিমতায় তৈরি অডিও এতো নিখুঁত হয় না।’

তবে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আসাদ বিন রনি দাবি করেছেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তদন্তে অডিও কল রেকর্ডটিকে সমন্বয়ক রিজাউরের ভয়েস বলে মনে হয়নি।’ তবে কাশবন রেস্তোঁরায় মেলা আয়োজন সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি আর কথা বলতে রাজি হননি।

অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রামভিত্তিক একজন সমন্বয়ক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মূলত রিজাউর যে বড় ভাইয়ের কথা বলেছে অডিও রেকর্ডে—ওটা তারই সাজানো। টাকাটি বড় ভাইয়ের নাম দিয়ে হজম করতেই তার এ কৌশল। কিন্তু যতটুকু জেনেছি আরেকজন সমন্বয়কের বাধায় মেলাও হয়নি, টাকাটিও হজম করতে পারেনি সে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

রিজাউরের আত্মপক্ষ

এদিকে অডিও কলরেকর্ডে যার কথা শোনা যাচ্ছে সেটি তিনি নন— এমন কথা জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রিজাউর রহমান মোবাইলে বলেন, ‘তার ছবি ব্যবহার করে কল রেকর্ডের ভিডিও তৈরি করে এটি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করা হয়েছে।’

বাঁশখালীর বাসিন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিজাউর রহমান চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।

কলরেকর্ডের বিষয়ে মোবাইলে রিজাউর রহমান বলেন, ‘এটা তো আমি জানি না। ওটা আমি আওয়ামী লীগের পেজে দেখেছি। ভয়েস শুনে কি মনে হচ্ছে আমার? রেকর্ডের ভয়েস আমার না। আমার ছবি দেখার পরে আমি নিজেই চিন্তা করেছি ভয়েসটা কার।’

এর আগে গত ৩ জানুয়ারি রিজাউর তাকে ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যায়িত করার পেছনে ‘২৪-এর পরাজিত শক্তি’কে দায়ী করে ফেসবুক পোস্টেও লিখেন, ‘আমার ছবি না দেখলে আমি বুঝতেই পারতাম না যে এটা আমার কন্ঠ। আমার নাম ব্যবহার করে অনেক জায়গায় অনৈতিক কার্যসিদ্ধির খবর আমার কাছেও এসেছিলো এবং সেখানে আমি শক্তভাবে তা মোকাবেলা করেছি। আমার কন্ঠের সাথে অডিও ক্লিপের কন্ঠের কোনো মিল আমি নিজেই খুঁজে পাচ্ছি না। ছবি যুক্ত না করলে বুঝতেই পারতাম না এটা আমার ভয়েস।’

রেস্তোঁরায় নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে রিজাউর বলেন, ‘দেখা তো অনেকের সাথেই হয়। শিউর বলতে পারছি না। কাশবন রেস্তোঁরায় আমি এমনিতেই বসি। বিজয় মেলা নিয়ে কথা হয়েছিল। হইতে পারে কথা, ওখানে চান্দগাঁওয়ের ছেলেপেলেরা তো আসে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm