চট্টগ্রামে শত ভাড়াটিয়াকে চিন্তামুক্ত করলেন বাড়ির মালিক

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেলস এক্সিকিউটিভ ফাহিম উদ্দিন (ছদ্মনাম)। তিন বছরের শিশু আর কলেজ পড়ুয়া স্ত্রী নিয়ে তাদের সংসার। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় তাদের গ্রাম হলেও পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায়। ১০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় দুই বছর ধরেই আছে একটি ভবনের দুই তলায়।

করোনাভাইরাসের কারণে এপ্রিল মাসে তাদের প্রতিষ্ঠানের পণ্য সরবরাহ বন্ধ ছিল। পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকায় তাই তার ভাগ্যে জোটেনি সে মাসের বেতনও। কিন্তু বাসা ভাড়াসহ সংসারের খরচের যোগান তো দিতে হবে তাকে। এ চিন্তায় তার ভাঁজ পড়ে যায় কপালে। একদিকে বেতন বন্ধ, অন্যদিকে চাকরি হারানোর ভয়ও জেঁকে বসেছে ফাহিমের উপর।

এমন পরিস্থিতিতে যে বাড়ির ভাড়া নিয়ে তার এত চিন্তা খোদ সেই বাড়ির মালিকই তার দিকে বাড়ালেন সহযোগিতার হাত। করোনা পরিস্থিতির কারণে ফাহিমের কাছ থেকে এপ্রিল মাসের বাড়ি ভাড়া নেবেন না বলেই জানিয়ে দেন তিনি।

এভাবে শুধু একজন ফাহিমের বাসা ভাড়াই নয়, নিজের মালিকানাধীন দুই ভবনের প্রায় শত ঘরের ভাড়াটিয়ার ভাড়াই মওকুফের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি প্রণব সাহা।

বাড়িভাড়া মওকুফের বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে প্রণব সাহা বলেন, ‘জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হয়েছে করোনাভাইরাস। চাকরি, ব্যবসার নির্ভরশীল মধ্যবিত্তরাও আজ অসহায়। কারণ অনেকের চাকরি চলে গেছে। অনেকের চাকরি কাগজ-কলমে আছে কিন্তু বেতন নেই। তাই মানবিক দিক চিন্তা করে আমি শতাধিক ঘরের ভাড়া মওকুফ করে পরিবারগুলোর পাশে চেষ্টা করেছি মাত্র।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ির মালিকদের যাদের সামর্থ্য আছে, যদি তারা ভাড়াটিয়াদের পাশে দাঁড়ায়— তাহলে মানবিক বিপর্যয় থেকে দেশ রক্ষা পাবে। কারণ সামনে আমাদের জন্য কী পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে আমরা জানি না।’

সমাজসেবক প্রণব সাহা চট্টগ্রাম শাখা মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি, মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য এবং পতেঙ্গা থানা সার্ক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কেন্দ্রের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।

সাগর/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!