চট্টগ্রামে লাখো জনতার উল্লাস ম্লান হচ্ছে দুর্বৃত্তের লুটতরাজে, থানায় থানায় আগুন

আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি বাড়ি হামলা

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর চট্টগ্রামে হাজার হাজার মানুষ পথে নেমে উল্লাস করেছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হচ্ছে। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন জায়গায় লুটতরাজও শুরু করেছে।

চট্টগ্রামে লাখো জনতার উল্লাস ম্লান হচ্ছে দুর্বৃত্তের লুটতরাজে, থানায় থানায় আগুন 1

সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন— এমন খবর পেয়ে হাজার হাজার মানুষ আনন্দ মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে নেমে আসেন। নারী-পুরুষ, এমনকি শিশু-কিশোররাও এসব মিছিলে যোগ দেন।

চট্টগ্রামে লাখো জনতার উল্লাস ম্লান হচ্ছে দুর্বৃত্তের লুটতরাজে, থানায় থানায় আগুন 2

নগরীর নিউমার্কেট, দামপাড়া, চকবাজার, বহদ্দারহাট, জামালখান, ওয়াসা মোড়, কোতোয়ালী, প্রবর্তক মোড়, বহদ্দারহাট, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল বের হয়।

চট্টগ্রামে অন্তত বেশ কয়েকটি থানায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কোতোয়ালী থানার ভেতরে আগুন দেওয়ার পর সেখানে বিপুল ক্ষতি হয়েছে। উত্তেজিত লোকজন সেখানে বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে। এছাড়া চান্দগাঁও থানায়ও হামলা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হামলা ঠেকাতে চান্দগাঁও থানার পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। পাহাড়তলী থানায় হামলা চালানোর পর সেখানেও আগুন দেওয়া হয়।
এছাড়া হামলা হয়েছে আকবরশাহ্, পতেঙ্গা, বায়েজিদ ও ইপিজেড থানায়।

সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল চারটার দিকে নিউমার্কেট মোড় থেকে যাওয়া একটি বিজয়মিছিল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর দারুল ফজল মার্কেটে অবস্থিত নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।

বহদ্দারহাটে একটি মিছিল থেকে একদল লোক আওয়ামী লীগ নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এরপর সেখানে আগুন দেওয়া হয়। ওই সময় মেয়র বাড়িতে না থাকলেও তার পরিবারের সদস্যরা বাসায় ছিলেন। মেয়রের বাড়ি থেকে প্রচুর জিনিসপত্র লুট করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিকেল পাঁচটার দিকে নগরীর কোতোয়ালী থানার পেছনে পাথরঘাটায় রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বাসায় আগুন দিয়েছে একদল লোক। এছাড়া যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা হেলাল আকবর বাবর চৌধুরীর নন্দনকাননের বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া বিকেল পাঁচটার দিকে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সেও হামলা করেছে একদল লোক। ইটপাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে তারা প্রধান প্রবেশপথের গেট ভাঙার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সেটা পারেনি। এ সময় তারা মুক্তিযুদ্ধ পুলিশ জাদুঘর ও কাঁচের ম্যুরাল ভেঙে ফেলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, ছররা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রামের লালদীঘিতে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে ঠেকাতে কারাগারের ভেতর থেকে ফাঁকা গুলি ছোঁড়েন কারারক্ষীরা। প্রায় ছয় হাজার বন্দি সেখানে রয়েছেন।

এদিকে নগরীর হাজারি গলিতেও বিভিন্ন দোকানপাটে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে। এ সময় হাজারী গলি মন্দিরেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে— এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm