চট্টগ্রামে রেলের জায়গায় শ্রমিক লীগ ও শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের অফিস

শ্রমিক লীগ নেতার দাপটে উচ্ছেদে ব্যর্থ রেলওয়ে

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে রেলের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ’ ও ‘রেলওয়ে শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম শাখা’র অফিস। এ অফিস দুটো থেকেই মূলত নতুন ও পুরাতন রেল স্টেশনের অপরাধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দুটি অফিস যেন অপরাধীদের আঁতুড়ঘর। বেশ কয়েকবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অফিস দুটি উচ্ছেদের চেষ্টা করলেও শ্রমিক লীগের এক প্রভাবশালী নেতার হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকালে সরেজমিন অফিস দুটির সামনে গিয়ে দেখা গেছে, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ ও শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ নামের দুটি অফিস পাশপাশি। শ্রমিক লীগের অফিসের দরজা বন্ধ করা এবং শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের শার্টার নামানো। অফিসের আশপাশে কাউকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অফিস দুটিতে রাতে নিয়মিত বসে জুয়া, চাঁদার ভাগ-বাটোয়ারা ও মাদকের আসর। এখানে অপরাধীদের আড্ডা বসে।

আরও জানা গেছে, রোববার (৭ জুলাই) রাতে রিয়াজউদ্দীন বাজারের পাখি গলিতে খুনের শিকার হন মনা। এই মনা খুনের অন্যতম আসামি জুয়েল ও মাস্টারমাইন্ড শুক্কুর শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদে বসেই আড্ডা দিতেন। খুনের আগেও তারা সেখানে ছিলেন। এমনকি চট্টগ্রামের ভাসমান বাসিন্দা জুয়েলের কোনো ঘরবাড়ি না থাকায় বেশিরভাগ রাত তিনি শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদেই কাটান।

মনা ও জুয়েল পরস্পর বন্ধু ছিলেন। তারা দু’জনই পুরাতন ও নতুন রেল স্টেশন নিয়ন্ত্রণ করতেন। পরে তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে খুনের শিকার হন মনা।

এছাড়া রেলওয়ে শ্রমিক লীগের অফিসটি নিয়ন্ত্রণ করেন অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী ও সংগঠনের বর্তমান সম্পাদক কামাল পারভেজ বাদল। বাদলের নেতৃত্বেই রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) অফিসে হামলা হয়। সে ঘটনায় আরএনবির সিআই আমান উল্লাহ আমান কোতয়ালী থানায় জুয়েলসহ একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে জিডি করেন। ওই ঘটনায় তখন জুয়েলকে নিজের কর্মী হিসেবে স্বীকার করেন কামাল পারভেজ বাদল।

কিন্তু গত ৮ জুলাই আবারও জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জুয়েলকে তার কর্মী হিসেবে অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের প্রভাবশালী নেতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সম্পাদক কামাল পারভেজ বাদল। তবে তার ব্যক্তিগত অপকর্মে দায় আমরা নেবো না।’

চট্টগ্রাম রেল বিভাগীয় কর্ম ব্যবস্থাপক (পূর্ব) সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ ক্লাবটি রেলের ভূমিতে অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে। আমরা এটি উচ্ছেদ অভিযান চলাবো।’

জেএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm