চট্টগ্রামে রেলপথে মাদকপাচারে নিরাপদ মার্শালিং ইয়ার্ড, বেচাকেনার নিয়ন্ত্রণে তিনজন

জড়িত আরএনবি সদস্যও

চট্টগ্রামের রেলপথে মাদকপাচারের রুট বদলে গেছে। মাদকপাচারকারীরা এখন স্টেশনের প্লাটফর্মের বদলে বেছে নিয়েছে রেলের মার্শালিং ইয়ার্ড। কোচ (বগি) পরিষ্কারের এই সংরক্ষিত জায়গায় মাদক এনে নিরাপদে তা সরিয়ে নেয় পাচারকারীরা। এই চক্রে তিন মাদক কারবারির সঙ্গে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) এক হাবিলদার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রামে রেলপথে মাদকপাচারে নিরাপদ মার্শালিং ইয়ার্ড, বেচাকেনার নিয়ন্ত্রণে তিনজন 1

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাসে গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) প্লাটফর্ম থেকে কোনো মাদকের চালান উদ্ধার করেনি।

s alam president – mobile

চট্টগ্রামে রেলপথে মাদকপাচারে নিরাপদ মার্শালিং ইয়ার্ড, বেচাকেনার নিয়ন্ত্রণে তিনজন 2

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মার্শালিং ইয়ার্ডে মাদক খালাসের পর তা চলে যায় রেলের আমবাগান কলোনির বস্তি ও জোড়া ডেবা বস্তি এলাকায়। এসব মাদক বেচাকেনা নিয়ন্ত্রণ করেন ডেবার পার বস্তির সোনিয়া, সোনিয়ার মা ও আলমগীর নামের এক ব্যক্তি। এরা সবাই চিহ্নিত মাদককারবারি এবং প্রত্যেকের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। তবে সোনিয়া ও আলমগীর গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সম্প্রতি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এই মাদককারবারিদের সঙ্গে বেশ সখ্যতা আছে আরএনবির হাবিলদার হাফিজুর রহমানের (৪৫)। এসব মাদক কেনাবেচার টাকার ভাগও যায় তার পকেটে। তিনি টাইগারপাস মার্শালিং ইয়ার্ডে (টিকিট নম্বর এইচ ৮৩৪/ই) কর্মরত রয়েছেন। ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর তিনি বদলি হয়ে এখানে আসেন।

Yakub Group

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মাদককারবারি জানান, আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেন বিভিন্ন স্থান থেকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে আসার পর কোচগুলোকে পরিষ্কার করতে টাইগারপাস মার্শালিং ইয়ার্ডে নেওয়া হয়। ইয়ার্ডটি সংরক্ষিত এলাকা। সেখানে রেলকর্মী, আরএনবি সদস্য ছাড়া অন্যরা ঢুকতে পারে না। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরএনবি হাবিলদার হাফিজ কোচ হতে মাদক নামিয়ে ইয়ার্ডের পাশের দুই বস্তিতে পাঠিয়ে দেন।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, আরএনবির হাবিলদার হাফিজুর রহমান মাদক বিক্রির পাশাপাশি আমবাগান থেকে টাইগারপাস রেল লাইনের আশপাশের দোকান থেকে চাঁদাবাজি করেন।

এছাড়া সিলেটের ভোলাগঞ্জে ইয়াবাসহ বিজেপির হাতে আটক, টিকিট কালোবাজারির মামলায় হাজতবাস, চাকরির দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে হাফিজুরের বিরুদ্ধে।

মাদক উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে জিআরপির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল করিম বলেন, ‘গত ছয় মাসে কোনো মাদক উদ্ধার করা হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরএনবির হাবিলদার হাফিজুর রহমান টিকিট কালোবাজারির দায়ে ২২ দিন জেল খাটা এবং তাকে চাকুরিচ্যুতির সুপারিশের বিষয়টি স্বীকার করেন৷

তবে মাদকপাচার ও ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন হাফিজুর।

হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মাদককারবারিদের সখ্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মার্শালিং ইয়ার্ডে দায়িত্বরত আরএনবির এএসআই ইমন মজুমদার। এই বিষয়ে হাফিজুরকে মৌখিকভাবে সাবধান করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিরাপত্তা বাহিনীর কমানডেন্ট রেজওয়ান উর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, খোঁজ নেবো।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!