চট্টগ্রাম নগরের রাত হলেই নিজেকে অসুস্থ দাবি করে সাহায্য চেয়ে ঘুরে বেড়ান এক মহিলা। তাকে কেউ সহযোগিতা করতে এগিয়ে এলেই বেরিয়ে আসে অপহরণকারী চক্র। সহযোগিতাকারী উল্টো শিকার হন অপহরণের। পরে মুক্তিপণের টাকা দিলেই ছাড়া পান, তা না হলে চলে মারধর। প্রতিদিন রাতে এভাবে সাধারণ লোকজনকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্র। তবে এবার দুই ব্যক্তিকে অপহরণের মামলায় এই চক্রের পাঁচজন ধরা পড়েছে পুলিশের জালে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) মধ্যরাতে তাদের বায়েজিদ বোস্তামির স্টিল মিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন আমিনুল ইসলাম শরীফ (২২), তোফাজ্জল হোসেন হৃদয় (২২), মো. হৃদয় (২২), মো. মিনহাজুল আবেদীন মারুফ (২২) এবং ওয়াজেদ হোসেন টিটু (২২)।
জানা গেছে, জুমায়রা ডেভেলপার নামে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন আরাফাত রহমান সানি নামের এক টাইলস মিস্ত্রি। তিনি গত ১৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১০টায় ষোলশহর ২ নম্বর গেট থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে এক অজ্ঞাতনামা মহিলা নিজেকে অসুস্থ জানিয়ে তাকে রৌফাবাদ পৌঁছে দিতে বলেন। তার অনুরোধে সিএনজি অটোরিকশাযোগে তাকে নিয়ে রৌফাবাদ পৌঁছামাত্রই চারজন ব্যক্তি তাকে জোর করে একটি বাড়ির ছাদে নিয়ে যান।
পরে তাদের আরও ছয় সহযোগী এসে তার কাছ থেকে মোবাইল, টাকা, হাতে থাকা স্বর্ণের আংটি ছিনিয়ে নেয়। এরপর তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তখন তিনি তার এলাকার বড় ভাই বাবু আহমেদ নামে একজনকে বিষয়টি জানালে তিনি ২০ হাজার টাকা নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকেও আটকে রাখে। পরে তাদের ঘটনা পুলিশকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। পরদিন ১৮ জানুয়ারি দুই ভুক্তভোগী থানায় মামলা দায়ের করেন।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা জানান, মামলার দায়ে পড়ে এ ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বায়েজিদের এশিয়াটিক কটন মিলের প্রাণ কোম্পানির গাড়ি ওয়াশিংয় স্থলের পশ্চিম পাশ থেকে। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে দিয়ে কৌশলে অপহরণ করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা স্বীকার করেছে আসামিরা।
আরএ/ডিজে