চট্টগ্রামে মন্ত্রী-এমপির পিস্তল-শটগানসহ ১৪৬ অস্ত্র ধরাছোঁয়ার বাইরে
১৫ বছরে বেরিয়েছে ৮৪২ অস্ত্রের লাইসেন্স
সাবেক শিক্ষামন্ত্রীসহ চার সাবেক সংসদ সদস্যের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রসহ মোট ১৪৬টি অস্ত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরও থানা বা জেলা প্রশাসনে জমা পড়েনি। গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৫ বছরে বিভিন্নজনকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে সেসব অস্ত্র ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৪২টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। এর প্রায় সবই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেওয়া হয়েছে। ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেসব অস্ত্রের ৬৯৬টি জমা পড়েছে। বাকি ১৪৬টি অস্ত্র এখনও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের আওতাধীন বিভিন্ন থানায় মোট ৪৫৪টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল বিভিন্নজনের নামে। এর মধ্যে ৩৬১টি অস্ত্র জমা পড়লে ৯৩টি অস্ত্র জমা পড়েনি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন বিভিন্ন থানায় ৩৮৮টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স থাকলেও জমা পড়েছে ৩৩৫টি অস্ত্র। ৫৩টি অস্ত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা পড়েনি।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নামে লাইসেন্স করা পিস্তল ও শটগান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা পড়েনি। সীতাকুণ্ডের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আল মামুনের পিস্তলও জমা দেওয়া হয়নি। দুজনেই বর্তমানে ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন দুই ছেলে মিরসরাইয়ের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমান রুহেল ও তার বড় ভাই সাবেদ উর রহমানের পিস্তল জমা দেওয়া হয়নি।
বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নামে পিস্তল ও একনলা বন্দুকসহ দুটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স থাকলেও সেগুলো জমা পড়েনি। বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরীর নামে লাইসেন্স করা একনলা বন্দুকও জমা দেওয়া হয়নি। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর একনলা বন্দুকটিও জমা পড়েনি।
সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর নামেও দুটি অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। সেই শটগান ও পিস্তলও জমা পড়েনি। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমানের নামে লাইসেন্স করা শটগান সাতকানিয়া থানায় জমা না দিয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে জানা গেছে।
ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনির নামে একটি পিস্তল লাইসেন্স করা থাকলেও সেটা থানায় জমা পড়েনি।
রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন চৌধুরীর নামে লাইসেন্স করা শটগান ও পিস্তল জমা পড়েনি। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে রাজধানীর গুলশান থানায় তার নামে লাইসেন্সকৃত পিস্তল ও রাইফেল ১৫০ রাউন্ড গুলিসহ জমা দেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সহিদুল ইসলাম শামীমের শটগান এবং চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক আরশাদ আলী খান রিংকুর নামে লাইসেন্স করা একনলা বন্দুক নির্ধারিত সময়ে জমা দেওয়া হয়নি।
সিপি