চট্টগ্রামে ভয়ংকর অপরাধে ‘ডট গ্যাং’, আওয়ামী লীগের হাত ঘুরে এখন সমন্বয়কদের বগলে (ভিডিও)

চট্টগ্রামে কয়েকজন শীর্ষ সমন্বয়কের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা কিশোর গ্যাংকে ব্যবহার করে ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষকে দমানো, চাঁদাবাজি ও ভূমি দখলেও ব্যবহৃত হচ্ছে এই কিশোর গ্যাং— এমন অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতাকর্মীদের একটি অংশ বলছেন, এদের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন চট্টগ্রামভিত্তিক দুই সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর রহমান। এর আগে নারী সমন্বয়করা অভিযোগ তোলেন ওই কিশোর গ্যাং লেলিয়ে দিয়ে তাদের হেনস্তা করা হয়। রাফির সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও রিজাউর এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

YouTube video

সর্বশেষ শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত শীর্ষ সমন্বয়ক ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফায় হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ওঠে এসেছে কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডবের চিত্র । বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ হামলা ও হেনস্তার ঘটনায় খান তালাত মাহমুদ রাফি ও আরেক সমন্বয়ক রিজাউর রহমানসহ চকবাজারভিত্তিক কিশোর গ্যাং ‘ডট গ্যাং’কে দায়ী করেছেন। সন্ধ্যায় ওয়াসা মোড়, এরপর রাতে জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভেতরে-বাইরে সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় আব্দুল হান্নান মাসউদ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদসহ আরও কয়েকজনের ওপর হামলা হয়। ‘ডট গ্যাং’ সদস্যরা আব্দুল হান্নান মাসউদ, মাহিন সরকার, রিফাত রশীদ ও রাসেল আহমেদকে প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধও করে রাখে। একপর্যায়ে রিজাউর ফোন করে একদল কিশোরকেও ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

‘ছুরি আকিবের’ গ্রুপ থেকে ‘ডট গ্যাং’

চট্টগ্রাম নগরীর স্বনামধন্য তিনটি স্কুলের অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী মিলে ২০২২ সালের শুরুর দিকে ‘ডট গ্যাং’ বা ‘ডট সুপ্রমেসি’ গড়ে একটি কিশোরগ্যাং গড়ে তোলে। এর আগে এদের একটি বড় অংশ ‘ছুরি আকিবের’ গ্রুপ নামে একটি চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও ‘হিরোইজম’ দেখানোর লক্ষ্য নিয়ে গড়ে ওঠা এই কিশোর গ্যাং শুরুর দিকে ছুরি হাতে রাস্তায় হাঁটার ভিডিও ও আগ্নেয়াস্ত্রের ভিডিও নিজেদের টাইমলাইনে শেয়ার করতে থাকে। মূলত অন্য কিশোর গ্যাংয়ের সামনে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে এই কৌশল নেওয়া হতো।

চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাসিরাবাদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি স্কুলের ছাত্রদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই কিশোর গ্যাংয়ের বেশিরভাগ সদস্যই মূলত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের কারও বাবা স্বনামধন্য চিকিৎসক, কারও বাবা সরকারি কর্মকর্তা কিংবা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

আওয়ামী লীগের সময় মোটাতাজা

শুরুতে স্কুলপড়ুয়া নারী শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করা, ফুটপাতে চাঁদাবাজির মধ্যে তাদের তৎপরতা সীমিত থাকলেও পরে তারা নগরীর চকবাজার ও জামালখানকেন্দ্রিক বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে তারা হয়ে ওঠে আরও বেপরোয়া। চকবাজারে তাদের একটি অংশ সাবেক কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু ও ছাত্রলীগ নেতা ইভানের হয়েও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ আবার যুবলীগের সন্ত্রাসী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সঙ্গেও সখ্য গড়ে তোলে। চকবাজার-জামালখান ছাড়িয়ে তাদের তৎপরতা ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল, বহদ্দারহাট, পাঁচলাইশ, মোমিন রোডেও। স্কুলপড়ুয়া হওয়ায় অপরাধ করেও এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার নজির নেই বললেই চলে। সব নেতাই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসছিলেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের সঙ্গে ‘ডট গ্যাং’ লিডার সাদিক আরমান। সুমনের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে তারা হয়ে ওঠে আরও বেপরোয়া।
আওয়ামী লীগ নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের সঙ্গে ‘ডট গ্যাং’ লিডার সাদিক আরমান। সুমনের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে তারা হয়ে ওঠে আরও বেপরোয়া।

২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চকবাজার বালি আর্কেড শপিং সেন্টারের সামনে থেকে ওই গ্যাং-এর সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাদের প্রত্যেকের বয়স ছিল ১৬ বছর বা তার কাছাকাছি। আটকদের মধ্যে ছিল— হোসাইনুল আমিন মিম (১৬), সামিউল ইসলাম (১৬), আহনাফ শাহরিয়ার (১৬), শরিফুল ইসলাম (১৬), শানিপ শাহীদ (১৬), মাশহাদ সিদ্দিকী (১৬) ও আবু তারেক (১৬)। এরা চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাসিরাবাদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল।

চক্রের নেতৃত্ব দেওয়া ‘গ্যাং লিডার’ হোসাইনুল আমিন মিম (১৬) চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। তার বাবা একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক। এর আগে নগরীর চকবাজার থানায় তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হওয়ার পর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। আটক বাকি ছয়জনের মধ্যে পদ্মা অয়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিইপিজেডের একটি কারখানার ব্যবস্থাপক, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক, প্রবাসী, মুদি দোকানি এবং অটোরিকশা চালকের সন্তানও ছিল।

ছাত্রলীগ নেতা নামধারী কয়েকজন ‘বড় ভাই’ এই কিশোর অপরাধীচক্রের মূল মদদদাতা জানিয়ে র‍্যাব-৭ এর ওই সময়কার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম জানিয়েছিলেন, ‘যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে মদদদাতা হিসেবে কয়েকজন তথাকথিত বড় ভাইয়ের নাম পেয়েছি। এরাই তাদের আর্থিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে জমি দখল, মারামারি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করে। এসব মদদদাতার কারও কারও রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আবার মদদদাতাদের যারা কথিত বড় ভাই তাদের মধ্যে প্রভাবশালী রাজনীতিক আছে।’

চট্টগ্রামে ভয়ংকর অপরাধে ‘ডট গ্যাং’, আওয়ামী লীগের হাত ঘুরে এখন সমন্বয়কদের বগলে (ভিডিও) 1

স্থানীয় সূত্রে ওই সময় জানা যায়, চকবাজার থেকে জামালখান পর্যন্ত চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের আশপাশে বেশ কয়েকটি আড্ডাস্থল আছে এই গ্যাংয়ের। একেকটি আড্ডাস্থলের নিয়ন্ত্রণ থাকে একেকজনের হাতে। এদের মধ্যে মাশফিকুল ইসলাম রাফি, আওয়ামী লীগের সাবেক কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুর অনুসারী অভি চৌধুরী ও অন্তু বড়ুয়াসহ আছে আরও কয়েকজন। বিত্তশালী পরিবারের সন্তান আবরার মাহমুদ গ্যাংয়ের পেছনে অর্থ ব্যয় করে।

পটপরিবর্তনের পরই সমন্বয়কদের আশ্রয়ে

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের গড়ে তোলা ডট গ্যাংকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পরপরই কব্জা করে নেন সমন্বয়ক রিজাউর রহমান। রিজাউর পরে খান তালাত মাহমুদ রাফিকেও এর সঙ্গে যুক্ত করে নেন। ডট গ্যাং-এর সদস্যদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের বেশ কিছু প্রমাণ চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে আছে।

নারী সমন্বয়কদের হয়রানি

কয়েকজন পুরুষ সমন্বয়ক চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নারী সমন্বয়কদের হয়রানি করছেন— সরাসরি এমন অভিযোগ তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঢাল হয়ে থাকা নারী সমন্বয়করা। তারা অভিযোগ করেন, কোনো বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করলেই তাদের বিরুদ্ধে কিশোর গ্যাং লেলিয়ে দেওয়া, অনলাইনে হয়রানিসহ অন্যান্য সমন্বয়কদের দিয়ে অপদস্ত করা হয়। এজন্য তারা খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর রহমানকে দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট গ্রুপের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করলেই ডট গ্যাং নামে একটি কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যদের লেলিয়ে দেওয়া হয় তাদের পেছনে।

চট্টগ্রামে ভয়ংকর অপরাধে ‘ডট গ্যাং’, আওয়ামী লীগের হাত ঘুরে এখন সমন্বয়কদের বগলে (ভিডিও) 2

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নারী সমন্বয়ক নাফিজা সুলতানা অমি বলেন, ‘প্রতিবাদ করার ফলে ভাইদের যতোটা না অপমান-অপদস্থ করেছে, তার থেকেও বেশি অপমান-অসম্মান করা হয়েছে নারীদের। এমনকি যে বোনেরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদেরকেই তারা বাজে ইঙ্গিত, চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা এমনকি বডি শেমিং করতেও ছাড় দেয়নি। কিশোর গ্যাংকে বৈধতা দিয়ে একজন নারীকে কীভাবে সাইবার বুলিংয়ের জন্য লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটার প্রমাণও হাতে আছে।’

নাফিজা সুলতানা অমি বলেন, ‘এসবের প্রেক্ষিতে সমন্বয়ক গ্রুপে কথা বলতে গিয়ে রাফির ঘনিষ্ঠ সমন্বয়কদের দ্বারা অমি বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ আক্রমণের শিকার হয়েছি।’ অমি বলেন, ‘এ সবকিছু দেখার পরেও আমাদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি একদম নিশ্চুপ ছিল। নারীদেরকে যেভাবে অপমান, অপদস্থ করা হয়েছে এবং যারা করেছে তাদের সাথেই রাফির ওঠাবসা সবসময়ই।’

এদিকে এমন সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত নভেম্বরের শুরুতে চট্টগ্রামের সমন্বয়কদের একটি অংশ কেন্দ্রে অভিযোগ জমা দিলেও সেটা সেখানেই ধামাচাপা পড়ে যায়।

ডাকলেই আসে ‘ডট গ্যাং’

কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমদ শনিবার চট্টগ্রামের ওয়াসা মোড়ের একটি অফিসে তিনিসহ তার অনুসারীদের ওপর হামলার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদকে নিয়ে ওয়াসা মোড়ে আমরা একটি অফিসে বসি। প্রায় ৩০ মিনিট পর রাফি তার দলবল নিয়ে আসে। কিছুদিন আগে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে যে রিজাউর রহমানের বিরুদ্ধে, সেসহ তার ‘ডট গ্যাং’ চলে আসে। এর একপর্যায়ে ডট গ্যাংয়ের লিডার সাদিক আরমান, নিজাম উদ্দিনসহ কিশোরগ্যাং সদস্যরা আমাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। তারা সেখানে ভাঙচুরও চালায় এবং আমাদের সাত সহযোদ্ধার ওপর হামলা চালায়।’

শনিবার ডট গ্যাংয়ের হামলায় আহত চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব ফারুক খান রোববার চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার পর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমিসহ অন্যদের ওপর ডট গ্যাংয়ের সদস্যরাই হামলা করে। ডট গ্যাংয়ের সাদিক আরমান ও নিজামকে আমি দেখেছি সেখানে। তারা ধারালো অস্ত্র বহন করছিল।’ হামলার শিকার অপর সমন্বয়ক আরিফ মঈনুদ্দিনও হামলার ঘটনায় ডট গ্যাংকে দায়ী করেন।

সমন্বয়ক রিজাউর রহমান অবশ্য চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে দাবি করেছেন, ‘ওখানে বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের ইন্টারনাল একটি মিটিং ছিল। সেখানে রাসেল, ছাত্রদলের ওমর ফারুক সাগর, অধিকারের সাইফুল, রিদওয়ান সিদ্দিকী, ছাত্রদলের তানভীর শরিফ— এরা মিলে ওইখানে এসে, আমাদের যারা আহত, তাদেরকে হামলা করে। এরপরে ওইখান থেকে হান্নান মাসউদকে নিয়ে তারা পালিয়ে যায়।’

আন্দোলনে ছিল কি ছিল না

এদিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা ডট গ্যাংয়ের সাদিক আরমানসহ কোনো কোনো সদস্য গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন— সমন্বয়কদের কেউ কেউ এমন দাবি করেছেন। সমন্বয়ক রিজাউর নিজেও এমন দাবি করেছেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে। তবে সমন্বয়কদের অপর একটি অংশ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাদিক আরমান বা ডট গ্যাংয়ের কোনো সদস্যকে দেখেননি বলে দাবি করেছেন।

একজন সমন্বয়ক নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘তারা আন্দোলনে ছিল— এমন কোনো ছবি বা ভিডিও কখনোই আমরা দেখিনি। মাঠে ছিল কিনা নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যও নেই। সাদিক আরমান ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলের একটা ছবি দেখায়। সেটিও মূলত টেকনাফে তোলা।’

রিজাউরের আত্মপক্ষ

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রিজাউর রহমান তার বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ সম্পর্কে রোববার (১২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ডট গ্যাংয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এবং তারা যেটা বলতেছে (কিশোর গ্যাং লিডার) সাদিক আরমানের সাথে আমার সখ্যতা, সাদিক আরমান আন্দোলন করছে, এবং আন্দোলনকারী সব সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। যেমন রাসেলের সাথে সম্পর্ক, তেমন সাদিক আরমানের সাথে সম্পর্ক। যেমন জোবায়েরুল আলম মানিকের সাথে সম্পর্ক, তেমন অন্য কারও সাথে সম্পর্ক আছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পূর্বের কোনো দায়ভার আমার ওপর যদি কেউ চাপাইতে চায়, তাহলে সেই দায়ভার দিয়ে তো আসলে লাভ নাই। ডট গ্যাং কী সেটা আমি জানি না। ডট গ্যাং সম্পর্কে যারা অভিযোগ করেছে, তারাই হয়তো জানতে পারে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm