চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী গোলাম আজাদ অপহরণ ও তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত আসামি চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ রোকন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ জুনুসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে করা মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) চন্দনাইশ থানার সিআর মামলা নং ২২৩/২৩-এর শুনানির পরে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ৫ম আদালতের বিচারক এই আদেশ দিয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল কালাম শামসুদ্দিন, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বজলুর রশিদ মিন্টুসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বাদির পক্ষে মামলা শুনানি করেন।
মামলার বর্ণনা এবং বাদীর আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মে রাত নয়টার দিকে ব্যবসায়ী গোলাম আজাদ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম শহর থেকে চন্দনাইশের নিজ বাড়িতে আসার পথে শাহ আমানত সেতুর (কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ) টোল প্লাজা অতিক্রম করার সময় চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ রোকন ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি আবু আহমেদ জুনুর নেতৃত্বে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী ফিল্মি কায়দায় গোলাম আজাদের গাড়ি আটকে হামলা চালায়। এভাবে মারধর করার পর গাড়িসহ আজাদকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়।
মামলার বর্ণনায় বলা হয়— ব্যবসায়ী গোলাম আজাদকে অপহরণের পর তার চোখ বেধে জীবননাশের জন্য বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে একপর্যায়ে আমিন আহমদ রোকনের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখানে নিয়ে তাকে বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, রোকন চেয়ারম্যান ও আবু আহমেদ জুনু ছাড়াও চিহ্নিত সন্ত্রাসী মমতাজ, হাকিম মেম্বার, ফারুক টিপুসহ আরও অনেকে মিলে বাদীকে বেধড়ক মারধর করেন। চেয়ারম্যানের খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, পাহাড়কাটাসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বললে আজাদকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে তারা হুমকি দেয়।
ব্যবসায়ী গোলাম আজাদের আইনজীবী জানান, অপহরণের পরে গোলাম আজাদের আত্মীয়স্বজনরা জাতীয় জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ তাৎক্ষণিক তৎপরতা শুরু করে। এ কারণে অপহরণকারীরা আজাদকে মেরে ফেলতে পারেনি। পুলিশ আসার খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এছাড়াও কর্ণফুলী টোল প্লাজায় ফিল্মি কায়দায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ অপহরণ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ কয়েকটি জাতীয় টেলিভিশনে প্রচারের পর তোলপাড় শুরু হয়।
জানা গেছে, চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ রোকন ধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ, জমি দখল, অবৈধ ইটভাটায় অবাধে পাহাড়ি জমি ধ্বংসের একাধিক মামলার আসামি। সম্প্রতি গৃহকর্মী রুনাকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা প্রকাশের পর সেটা ধামাচাপা দিতে রোকন ও তার সহযোগী আবু আহমেদ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।