চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারী-পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ আহত, বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ

নিউমার্কেটের দিকে ফের এগোচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা

চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। সেই সংঘর্ষ গড়ায় কোতোয়ালী থানার পাশে মুসলিম হাই স্কুলের সামনের এলাকায়ও। আন্দোলনকারীরা কয়েকটি ভাগে বিভিন্ন দিকে সরে যাওয়ার পর দুপুরে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সংঘর্ষে পুলিশের পাশাপাশি এক ছাত্রলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে থেকে গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে। এদিকে দুপুর দেড়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা আবার নিউমার্কেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারী-পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ আহত, বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ 1

আহতদের মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেলের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ৪৭ জন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারী-পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ আহত, বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ 2

রোববার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে নিউমার্কেটসহ কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহতদের মধ্যে চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিও নিউমার্কেটে আহত হয়েছেন। অন্যদিকে আহতদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজসহ ছাত্রলীগের অন্তত ছয়জন নেতাকর্মী রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

নিউ মার্কেট এলাকায় এ সময় কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হন। এর মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনের নিজস্ব প্রতিবেদক রিমন সাখাওয়াৎ এবং ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক মিজানুর রহমান।

সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা নিউমার্কেট এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আশপাশে অবস্থান নিতে থাকেন। সকাল থেকেই পুরো এলাকা ছিল থমথমে। এ সময় বিপণিবিতানসহ কোনো দোকানপাট খোলা হয়নি।

সকাল ১১টার দিকে সিটি কলেজ ও কোতোয়ালী থানার দিক থেকে এসে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের দুটি দল। এরপর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। পুলিশ এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় থেমে থেমে গুলির শব্দও শোনা গেছে। পুলিশের পাশাপাশি সরকারি সিটি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা মো. ফয়সালকে রিভলবার থেকে গুলি ছুঁড়তে দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর সড়কের বেশ কিছু ইটের টুকরো ও ভাঙা চৌকি পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এর একপর্যায়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার বড় একটি অংশ স্টেশন রোড হয়ে টাইগারপাসের চলে যায়। অপর একটি অংশ নন্দনকানন পুলিশ প্লাজার দিকে চলে যায়। টাইগারপাস যাওয়ার সময় তারা রাস্তার পাশের দোকান ও একটি পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। নিউমার্কেট মোড়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশের জন্য আনা মাইকও ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া দারুল ফজল মার্কেটে আওয়ামী লীগের অফিসেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে জানা গেছে।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm