ফ্যাসিবাদের দোসরদের সহযোগিতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ থানা বিএনপির সভাপতিসহ চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত শওকত আজম খাজা স্বাক্ষরিত এক নোটিশে একথা জানানো হয়।
দল থেকে অব্যাহতি পাওয়া চারজন হলেন— আকবরশাহ থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার সেলিম, সহ-সভাপতি রেহান উদ্দিন, উত্তর পাহাড়তলী ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জমির আহমেদ এবং আকবর শাহ থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব ইলিয়াস খান। তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম এবং তার নেতাকর্মীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ছিল।
ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে চট্টগ্রামে পদধারী যুবলীগ নেতার ‘দখল করা জায়গা’ হাত বদলে বিএনপি নেতাদের দখলে যাওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর বিনিময়ে বিএনপি নেতাদের ‘সুপারিশে’ থানা ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তারের হাত থেকে বেঁচে যান ওই যুবলীগ নেতা। পুলিশ ওই যুবলীগ নেতাসহ তিনজনকে ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার করলেও দু’জনকে আসামি দেখায় এবং ওই যুবলীগ নেতাকে চালান করে ‘সন্দেহজনক ঘোরাফেরার’ অপরাধ দেখিয়ে। তবে বিএনপি নেতা এ ঘটনা অস্বীকার করে যুবদল নেতার ওপর দায় চাপান।
চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানায় গত ২১ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয় তিন আসামিকে। গ্রেপ্তার ওই যুবলীগ নেতা হলেন মো. রফিকুল ইসলাম টিটু (৪৮)। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সহ-সভাপতি। অপর দুজন হলেন মো. জমশেদ আলম (৪০) ও মো. আবদুর রাজ্জাক (৩২)। এদের মধ্যে জমশেদ যুবলীগ নেতা এবং রাজ্জাক থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
জমশেদ ও রাজ্জাকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আকবরশাহ থানা সংলগ্ন হাউজিংয়ের প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের খাস ভূমি দখল করে বাউন্ডারি দিয়ে টিনের ঘর নির্মাণের পর ভোগ করে আসছিলেন রফিকুল ইসলাম টিটু। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে থানা ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার হন টিটু। গ্রেপ্তারের পর বিএনপি ও যুবদল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। ওই দুই নেতা হলেন—নগর বিএনপির সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও আকবরশাহ বিএনপি সহ-সভাপতি রেহান উদ্দিন এবং থানা যুবদল সাবেক সদস্য সচিব ইলিয়াস।
আরও জানা গেছে, রেহান উদ্দিন ও ইলিয়াসকে ওই খাস জায়গার দখল ছেড়ে দেন যুবলীগ নেতা টিটু। ইলিয়াস ওই জায়গার দখল নিয়ে তালা মেরে দেন। এরপর বিএনপি নেতাদের ‘সুপারিশে’ পুলিশ তাকে সিএমপি অধ্যাদেশ ৮৮(ডি)/১০৩ ধারায় আদালতে চালান দেয়। যেখানে টিটুকে সন্দেহজনক হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়ার অপর যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকে ভাঙচুর মামলায় চালান দেওয়া হয়।
সিপি