চট্টগ্রামে বাড়ি বানাতে গেলেই দুয়ারে দাঁড়ায় চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীরা তৎপর এলাকায় এলাকায়
চাঁদা না পেলে চলে হামলা-ভাঙচুর, আছে অভিনব সব কৌশলও
প্রবাসী আবছার চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর পরই আচমকা উদিত হয় চাঁদাবাজের দল। তার কাছে দাবি করা হয় কোটি টাকা চাঁদা। সেই টাকা না পেয়ে ওই প্রবাসীর পাঁচলাইশের বাসা খুঁজে নিয়ে ভোর রাতে সেখানে পেট্রোল বোমা হামলা চালায় চাঁদাবাজের দল। ঘটনাটি ২০২০ সালের এপ্রিলের। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের সহযোগী ঢাকাইয়া আকবর অস্ত্রসহ আটক হন।
চান্দগাঁওয়ের এই প্রবাসী আবছার একা নন— চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ, পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর, বিবিরহাট, খতিবেরহাট, হাদুমাঝি পাড়া, চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়া, অদুর পাড়া এলাকায় ভবন নির্মাণ থেকে জমি কেনাবেচা, এমনকি সীমানা প্রাচীর দিতে গেলেও চাঁদার জন্য হানা দেয় মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত সাজ্জাদের চট্টগ্রামে অবস্থানরত গ্রুপটি। এখন সাজ্জাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ সমস্ত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করছেন মুরাদপুরের মো. ফিরোজ ওরফে ডাকাত ফিরোজ। আর চাঁদাবাজি এই প্রথা চলে আসছে দীর্ঘ বহু বছর ধরে। নীরব এই চাঁদাবাজির নেপথ্যে জড়িত চট্টগ্রামের অনেক প্রভাবশালী, এমনকি রাজনীতিবিদও।
২০১১ সালে চট্টগ্রামের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচটি অস্ত্রসহ বায়েজিদে এবং ২০১৩ সালে ফের অস্ত্রসহ পাঁচলাইশে আটক হয়েছিলেন ফিরোজ। এরপর তাসফিয়া হত্যার ঘটনাসহ কয়েকটি ঘটনার জের ধরে দুই দফা কারাগারে যান তিনি। তবুও বন্ধ হয়নি বেপরোয়া ফিরোজের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। তার অধীনে শতাধিক কিশোর অপরাধীর একটি বড় চক্র সক্রিয় রয়েছে এলাকাটিতে।
চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় সব পাড়া-মহল্লায় ভবন নির্মাণকে ঘিরে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। মাঝেমধ্যে দু-একটি ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যন্ত গড়ালেও অধিকাংশ ভবনমালিক ঝামেলা এড়াতে চাঁদা দিয়েই নির্মাণকাজ চালিয়ে নেন।
সরাসরি চাঁদা দাবির চেয়েও এখন আবার অভিনব সব কৌশল অবলম্বন করছে চাঁদাবাজরা। বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবনে নিজেদের ইচ্ছেমতো মূল্যে মালামাল সরবরাহের কাজ দেওয়ার জন্য বাধ্য করা হয় মালিকপক্ষকে। কখনও আবার নির্মাণশ্রমিক ও ঠিকাদারদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়। মারধরসহ চলে ভয়াবহ হামলা ও ভাংচুরও। অনেক সময় নামাতে দেওয়া হয় না নির্মাণসামগ্রীও। ভবন মালিক অনেকটা অসহায় হয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে এককালীন চাঁদা পরিশোধ করেন, নয়তো চাঁদাবাজদেরই কাজ দিতে বাধ্য হন। এরপর গ্রুপগুলো তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে কমিশনে কাজটি বিক্রি করে দেয়। ফলে ওই সরবরাহকারীও ইচ্ছেমতো রেট ও নিম্নমানের মালামাল দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়।
ভবন নির্মাণকালে চাঁদাবাজির এই চিত্র নগরজুড়ে প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নিয়মিত ঘটনা। এই চাঁদাবাজির নেপথ্যে রয়েছে সরকারি দলের অনেক নেতা-কর্মী, এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেন কথিত ‘বড় ভাই’ থেকে স্থানীয় কিছু কাউন্সিলরও। এসব অপরাধীর আবার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সখ্য রয়েছে। ভুক্তভোগী কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে ভুক্তভোগীকে উল্টো আপস করার পরামর্শ দেওয়ার কথা জানান নির্মাণাধীন ভবনের বেশ কয়েকজন মালিক।
চট্টগ্রামে নগরীতে ভবন নির্মাণ করতে গেলেই এভাবে বিচিত্র সব কায়দায় চরম ভীতিকর অভিজ্ঞতা মেলে মালিকদের। বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার ও বাকলিয়া থানা এলাকায় চাঁদাবাজির এই প্রথা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলোতে এটি সবচেয়ে বেশি।
এসব এলাকায় চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গ্রুপ-উপগ্রুপ বিভিন্ন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে খুনোখুনিতেও জড়িয়েছে। আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে অন্তত ১০টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীতে। চট্টগ্রামস নগর পুলিশের (সিএমপি) সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাংবিরোধী অভিযান ঝিমিয়ে পড়ায় নীরব এই চাঁদাবাজি চলছে অবাধেই।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন শমসেরপাড়া, চন্দ্রিমা আবাসিক, চান্দগাঁও আবাসিক, চাঁনমিয়া আবাসিকসহ আশপাশেরএলাকায় চাঁদা ছাড়া কোনো ভবনই নির্মাণ করতে দেওয়া হয় না। এলাকাটিতে একসময় মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন আরমান হাজারী। ২০১৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন হাজারী। এরপর থেকে এলাকাটিতে আধিপত্য বিস্তার করেন সন্ত্রাসী ড্রিল জালাল ও পুলিশের তালিকাভুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার নেওয়াজ শরীফ ওরফে কিরিচ নেওয়াজ।
জানা গেছে, কিছুদিন আগেও শমসেরপাড়ায় চাঁদা না পেয়ে এক প্রবাসীর নির্মাণাধীন একটি নয় তলা ভবন দখল করে রেখেছিল ড্রিল জালালের গ্রুপ। চলে হামলাও। এ ঘটনায় মামলার পরও চাঁদা দিয়েই শেষমেশ ভবনে উঠতে হয়েছে মালিকপক্ষকে। চাঁদার জন্য ২০১৯ সালে এক যুবকের দুই পায়ে ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে আলোচনায় এসেছিলেন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জালাল। তার বিরুদ্ধে অপহরণ, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাকলিয়া ও চকবাজারের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ভবন নির্মাণ করতে গেলে সন্ত্রাসীরা হানা দেয় নিয়ম করে। নির্মাণশ্রমিকদের মারধর ও ভাঙচুরসহ মালামাল ঢুকতে দেওয়া হয় না। কল্পলোক আবাসিক, রসুলবাগ আবাসিক, মৌসুমী আবাসিকসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলছেই। পুলিশের সহযোগিতা চাইলে উল্টো সন্ত্রাসীদের ‘প্রভাবশালী’ আখ্যা দিয়ে সমঝোতার পরামর্শ দেন পুলিশই— এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী কয়েকজন ভবন মালিকের।
এই জোনটিতে চাঁদাবাজিতে সক্রিয় রয়েছেন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী কিলার ফয়সাল, শেখ মহিউদ্দিন, সোহেল ওরফে সেলুসহ কয়েকজন। ফয়সালের বিরুদ্ধে তিনটি চাঞ্চল্যকর হত্যাসহ ১৮টি মামলা রয়েছে। কলেজছাত্র রোহিত হত্যার আসামি শেখ মহিউদ্দিন র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আটক হলেও জামিনে এসে ফের চাঁদাবাজিতে জড়িয়েছেন। গত বছরের ১৯ নভেম্বর বাকলিয়ার একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আটক হন সোহেল ওরফে সেলু। এরা সবাই পেশাদার অপরাধী। রয়েছে দুর্ধর্ষ গ্যাং। তাদের আধিপত্যের জের ধরে কলেজ ছাত্র রোহিত, যুবলীগের ফরিদ ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমন খুন হন।
চকবাজার এলাকার একক নিয়ন্ত্রণ এখন অধুনা ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন ইভানের হাতে। চকবাজার থানা পুলিশের কিশোর গ্যাংয়ের তালিকায় প্রথমেই নাম রয়েছে তার। বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে পাঁচটি মামলা দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। আর এই ইভানকেই গত বছর চকবাজার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি করা হলে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে নগর ছাত্রলীগ। বাকলিয়া ও চকবাজার এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসে এছাড়াও সক্রিয় রয়েছেন রবিউল ইসলাম রাজু, নাইমুল হাসান তুষার ও ভাগিনা সাকিব। তারা প্রত্যেকে ত্রাস সৃষ্টিকারী কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এলাকাগুলোতে।
এদিকে দুই নম্বর গেইট এলাকায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন সোলেমান বাদশা। প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোহেল হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি তিনি। গত বছর এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করে তিনি আটক হন পাঁচলাইশ থানা পুলিশের হাতে। কিছুদিন কারাগারে থাকলেও জামিনে এসে ফের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে জড়িয়েছেন। পুলিশ গুলিবিদ্ধ হবার আলোচিত ঘটনায়ও তার নিয়ন্ত্রিত কিশোর গ্যাংয়ের নাম ওঠে আসে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরী কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা ও মুন্সী পুকুরপাড় এলাকাজুড়ে অবাধে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন জসিম উদ্দিন সুমন, আমির হোসেন ও কালা সাঈদ। তাদের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় ডজনখানেক মামলা থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যেই। গত ৮ জানুয়ারি চাঁদাবাজির ঘটনায় চকবাজার থানায় হাতেনাতে আটক হন আমির ও তার সহযোগী আরিফ। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়। অন্যদিকে বাদুরতলা এলাকায় চাঁদাবাজির নেপথ্যে রয়েছেন যুবলীগ নামধারী নুরুল আলম ও ছাত্রদল নেতা সাজিদ হাসান রনি।
সিপি
এখানে অনেক চিন্তায় গাড়ি সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, সৌরভ উদ্দিন বাপ্পা, জুলহাস, শাহাবুদ্দিন সাবু,এহসানুল হক ইমন, ইয়াসিন, রঙ্গি পারার নুরু, রাইসুল, হৃদয়, সুজন, অন্ত বড়ুয়া, মিসবাহ,আজগর,সাজ্জাদ, সাজিদ, জয়নগরের রুবেল, জয়নগরের বাপ্পা, দেবপাহাড় এর রাসেল, যুবলীগ নেতা নামধারী নাহিদুল ইসলাম জাবেদ, নাম ও ঠিকানা ইমেল আইডি গোপন করার শর্তে পাঠালাম।
অক্সিজেন এলাকায়ও আছে এমন। শীতলঝর্ণা ও গ্রীনভিউ আবাসিকে তাদের চাদাবাজি ভিন্ন কায়দায়। ইট বালি সিমেন্ট দেয়ার নামে।
১হাজার ইট ফিল্ডে যে দামে বিক্রয় হয়, তারা সেই দামে দেয়। তবে প্রতি হাজারে ২৫০ইট কম দেয়ার অনেক প্রমাণ আছে।তাদের থেক্ব ইট/লোহা/সিমেন্ট না নিলে রাস্তা দিয়ে ট্রাক প্রবেশ বাধা। পুলিশও পায় কমিশন।
এখানে অনেক চিন্তায় গাড়ি সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, সৌরভ উদ্দিন বাপ্পা, জুলহাস, শাহাবুদ্দিন সাবু,এহসানুল হক ইমন, ইয়াসিন, রঙ্গি পারার নুরু, রাইসুল, হৃদয়, সুজন, অন্ত বড়ুয়া, মিসবাহ,আজগর,সাজ্জাদ, সাজিদ, জয়নগরের রুবেল, জয়নগরের বাপ্পা, দেবপাহাড় এর রাসেল, যুবলীগ নেতা নামধারী নাহিদুল ইসলাম জাবেদ, নাম ও ঠিকানা ইমেল আইডি গোপন করার শর্তে পাঠালাম।
শুধুমাত্র সম্পাদক ছাড়া অন্য কারও পক্ষে মন্তব্যদাতা সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আমরা পূর্ণ পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতা মেনে চলি। সুতরাং নিঃসন্দেহ থাকুন।
পশ্চিম ষোলশহর এলাকার হিলভিও, মুমিনবাগ এলাকায় বিল্ডিং করতে গেলে বাধ্যতামুলক ইট,বালি, সিমেন্ট নিতে হয়। এক ছাত্রলীগ নেতার ইন্ধনে সিন্ডকেট জড়িত।
চট্টগ্রাম কলেজ রোডে হোস্টেলে গেট থেকে থেকে শুরু করে কেয়ারি সহ আশেপাশের এলাকা ও গোলজার মোড় থেকে নিয়ে অলিখা মোড় পর্যন্ত ফুটপাত থেকে প্রতি গাড়ি তুই শো থেকে দেড়শ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে বিপ্লব নামে এক ছেলে এবং তার সাথে আরও দুই সহযোগী আছে রুবেল ও বাপ্পা এবং আশিক ও সাজ্জাদ এরা সবাই পুলিশের খাতায় চিহ্নিত মামলার আসামি এরা নগরীর চকবাজার এবং পাঁচলাইশ থানায় বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন সময় আটক হয়েছিল আর এরা একটা রাজনীতিক ভুয়া পরিচয় আছে এদের রাজনীতিক লিডার এর নাম অন্তু বড়ুয়া যে কি না কিছুদিন আগে চকবাজার থানা থেকে গ্রেফতার হয়ে পরে জামিনে বের হয় হয়েছিল ছিন্তাই এবং চাঁদাবাজির ও ইভটিজিং এর কারণে প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করে তাই আপনাদের মাধ্যমে এটি আমাদের আবেদন যেন এক এদেরকে নিয়ে পত্রিকায় একটা প্রতিবেদন লিখা হয়।ধন্যবাদ ।