চট্টগ্রামে ফের দুই থানা ছাত্রলীগ ইস্যুতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

চট্টগ্রামে ডবলমুরিং ও চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের কমিটি ইস্যুতে কিছুদিন চুপ থাকলেও আবার সক্রিয় হচ্ছে কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এই দুই থানার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি করার প্রেক্ষিতে আন্দোলন বন্ধ করা হলেও নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় নতুন করে আবার আন্দোলনে নামছেন তারা। এর জের ধরে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আগ্রাবাদ এলাকায় ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

তবে তদন্ত কমিটির নেতারা বলছেন, আনঅফিসিয়ালি তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়ে গেছে। শীঘ্রই অফিসিয়ালি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের বাদামতলী মোড়ে ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতাকর্মী ও কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে গড়িমসির কারণে আবারও আন্দোলনে যাওয়ার কথা বলছেন আন্দোলনকারীরা। আগামী দুয়েকদিনে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার কথাও বলছেন তারা।

নগর ছাত্রলীগ নেতা জহুর কাইয়ুম ফয়সাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে অছাত্র, অযোগ্য ও বিতর্কিতদের নিয়ে এই দুই থানা কমিটি দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজ এই কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসে আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি। তদন্ত কমিটির সদস্যরা আমাদের সাথে কথা বললেন। আমরা তাদেরকে আমাদের অভিযোগের বিষয়ে সব প্রমাণাদিও দিলাম। অথচ ৭ দিনের স্থলে ১৭ দিন গেলেও তদন্তের রিপোর্ট না দেয়ায় আমরা হতাশ।

‘এদিকে নতুন দুই কমিটির নেতারা এর ফাঁকে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে মাঠে দখলের চেষ্টা করছে। এর আগে চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের ব্যানারে অনুষ্ঠান করা হলো। শুক্রবার ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগ আগ্রাবাদে মিছিল করার ঘোষণা দেয়। আমরাও দেওয়ানহাট থেকে আগ্রাবাদ বিক্ষোভ মিছিল করি। আমাদের মিছিল আগ্রাবাদ বাদামতল মোড়ে যেতেই তারা আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে। সেখানে নতুন ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই ছিলেন।’

তবে হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ সায়েম। তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের মিছিল ছিল লাকী প্লাজা থেকে ব্যাপারী পাড়া। সেখানে গিয়ে আমাদের কার্যক্রম শেষ হয়ে যায়। পরে শুনেছি মিছিল শেষে ফেরার পথে ওদের সাথে আমাদের ছোট ভাইদের কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে। আমরা কেউ সেখানে ছিলাম না। পরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখি তেমন কিছুনা।

এদিকে তদন্ত কমিটিতে থাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন বলেন, আমরা তদন্ত রিপোর্ট আনঅফিসিয়ালি দিয়ে দিয়েছি। এখানে নতুন করে আরও থানা কমিটি করার কথা ছিল। ইতোমধ্যে আমরা কেন্দ্রকে সুপারিশ করেছি যাতে এখানে আর কোন থানা কমিটি দেয়া না হয়। আমাদের তদন্ত কমিটির আরেকজন সদস্য গ্রামের বাড়িতে থাকায় এতদিন আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারিনি। আশা করছি কাল বা পরশু মধ্যে রিপোর্ট জমা দিয়ে দিবো।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ডবলমুরিং ও চান্দগাঁও থানার নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও শামীম পারভেজকে দায়িত্ব দিয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশও দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm