প্লাস্টিক সার্কুলারিটি (চক্রায়ন) বাস্তবায়নে ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) সঙ্গে কাজ করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এজন্য তাদের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুন) চট্টগ্রামের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার এবং ইয়ং পাওয়ার ইন অ্যাকশনের (ইপসা)সিইও আরিফুর রহমান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্লাস্টিক মানব সভ্যতাকে সাহায্য করেছে, কিন্তু প্লাস্টিক বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা মানবজাতির জন্য পরিবেশগত হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের খালগুলো প্লাস্টিক বর্জ্যের বিধ্বংসী প্রভাবে ভুগছে, যার ফলে মাছ মারা যাচ্ছে, জমি অনুর্বর হচ্ছে এবং বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। কর্ণফুলী নদী একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে জমে থাকা প্লাস্টিক নদীর প্রবাহকে বাধা দেয়, প্রচলিত ড্রেজিং প্রক্রিয়ার জন্য যা দুর্ভেদ্য। আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে এবং সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, এবং ইপসা-এর মধ্যে সহযোগিতা স্থানীয় ভ্যালু চেইনকে উন্নত করতে, আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সহায়তা করতে এবং চট্টগ্রামে প্লাস্টিকের সার্কুলারিটি বাড়াতে সাহায্য করবে।’
ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও এবং এমডি জাভেদ আখতার বলেন, ‘ইউনিলিভারের বৈশ্বিক অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে, আমরা ২০২০ সাল থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী পদ্ধতি ব্যবহার করছি। যার মধ্যে প্যাকেজিংয়ে উদ্ভাবন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের জন্য একটি টেকসই মডেল তৈরি এবং পরিচালনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশের ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নে আমাদের অবশ্যই প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা করতে হবে। আমরা চট্টগ্রাম থেকে ৭০০০ টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছি এবং সংগৃহীত প্লাস্টিকের ১০০ ভাগ পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিটি কর্পোরেশন ও ইপসা’র সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি, যাতে আমাদের ’ইকোনোমিস অব স্কেল’ অর্জনের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করতে পারি। আমার বিশ্বাস আমাদের এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরকে প্লাস্টিক সার্কুলারিটি ভিশনের দিকে এগিয়ে নিতে পারব।’
ইপসা’র সিইও আরিফুর রহমান বলেন, ‘ইপসা চট্টগ্রামে তার যাত্রা শুরু করেছিল এবং তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই শহরের উন্নয়নকাজ করে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরটির উন্নয়ন হলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একই হারে বাড়েনি। ফলশ্রুতিতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও সামুদ্রিক বর্জ্যের পরিমাণ বেড়েছে। এই কারণে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করা আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের অ্যাক্টিং চিফ কনজারভেন্সি অফিসার (ডেপুটি সেক্রেটারি) মো. আবুল হাশেম, কাউন্সিলর এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোবারক আলী, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মেট্রোর ডিরেক্টর (ডেপুটি সেক্রেটারি) হিল্লোল বিশ্বাস।
এছাড়া ইউনিলিভার বাংলাদেশের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপ অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিরেক্টর শামিমা আক্তার প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন।