চট্টগ্রামের হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জাবেদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার কলিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় হালিশহর থানায় মামলা হলেও পুলিশ এখনও এসআই জাবেদকে ‘ধরতে’ পারেনি।
২০১৪ সালে মিজানুর রহমান জাবেদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ফাতেমা আক্তার কলির বিয়ে হয়। এরপর থেকে চট্টগ্রামের হালিশহরে থাকতেন তারা। কিন্তু জাবেদের বদমেজাজি স্বভাবের কারণে বিভিন্ন সময় কলিকে মারধর করতেন তিনি। এরই মধ্যে প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন জাবেদ।
এসব বিষয়ে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কলির ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এর জের ধরে গত ৬-৭ মাস আগে কলিকে মারধর করলে তার মাথা ও চোখে আঘাত পান। এসব ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করলে কলিকে হত্যার হুমকি দেন জাবেদ।
এর জের ধরে গত ২৫ মার্চ বিকালে ফাতেমা আক্তার কলিকে মারধর করে হত্যার পর চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে কলি আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের সদস্যদের মোবাইলে জানান জাবেদ। এ সময় নিহত কলির গলায় গোলাকার কালো দাগ এবং হাতে কাটা জখমের একাধিক চিহ্ন দেখা যায়।
পরে এই ঘটনায় চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় এসআই মিজানুর রহমান জাবেদসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন কলির বাবা আহছান উল্যাহ।
পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান জাবেদ ও নিহত ফাতেমা আক্তার কলি দুজনই নোয়াখালীর বাসিন্দা। জাবেদ সদর উপজেলার বিনোদপুরের বাসিন্দা এবং কলি একই উপজেলার কাদির হানিফের বাসিন্দা। তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানও রয়েছে।
গৃহবধূ কলির মৃত্যুর পরদিন এ ঘটনার বিচার ও জাবেদের ফাঁসির দাবিতে কলির লাশ নিয়ে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নিহতের পরিবার এবং স্বজনরা। পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেন।
নিহত কলির পরিবারের দাবি, এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। হত্যার অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রায় দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও প্রধান অভিযুক্ত জাবেদ পলাতক আছেন এখনও।
এসআই জাবেদ পলাতক আছেন— একথা জানিয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এ ঘটনায় মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
সিপি