চট্টগ্রামে পাসওয়ার্ড চুরি করে কন্টেইনার খালাস, মামলার জালে ৫ ব্যবসায়ীসহ ১০ কাস্টমস কর্মকর্তা
অ্যাসাইকুডা হ্যাকিং কেলেঙ্কারি
চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের পাসওয়ার্ড চুরি ও অপব্যবহার করে কন্টেইনার খালাসের ঘটনা নিয়ে দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সাবেক ও বর্তমান ১০ জন রাজস্ব কর্মকর্তা এবং পাঁচ ব্যবসায়ীকে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১৮ সালের এই ঘটনায় প্রায় চার হাজার বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে কন্টেইনার খালাসের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অনৈতিক লেনদেন সম্পন্ন হয়েছিল, যা দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল।
দুদকের উপপরিচালক মো. আক্তারুল ইসলাম জানিয়েছেন, বুধবার (২৯ অক্টোবর) প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শিগগিরই মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়ের করা হবে। অভিযোগের পরিসরে এই মামলা দেশের বাণিজ্যিক প্রশাসনে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচন করছে।
মামলার অনুমোদিত আসামিদের মধ্যে সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা রয়েছেন মো. জয়নাল আবেদীন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাসুদেব পাল, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, দিদারুন নবী, সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রনি বড়ুয়া ও মো. আরিফুর রহমান। বর্তমান রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন ফারহানা আকরাম এবং মো. মাহবুবুর রহমান।
ব্যবসায়ী আসামিদের তালিকায় অন্তরা করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. মুশতাক খান, মেসার্স এ. অ্যান্ড জে. ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের অংশীদার মো. আবদুল জলিল আকন ও মো. আলতাফ হোসেন, মেসার্স প্যান বেঙ্গল এজেন্সির মো. সেলিম এবং জিআর ট্রেডিং করপোরেশন সিঅ্যান্ডএফ লিমিটেডের মো. আব্দুল রহিম অন্তর্ভুক্ত।
দুদক জানিয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারায় আত্মসাৎ, প্রতারণা, জাল নথি প্রণয়ন ও ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের একাধিক ইউজার আইডি হ্যাক করে কন্টেইনার খালাসের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। এতে বিপুল সংখ্যক কন্টেইনার অবৈধভাবে খালাস করা হয়, যা দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনে শঙ্কা সৃষ্টি করেছিল। এই ঘটনায় সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগে দুদক সক্রিয়ভাবে তদন্ত চালিয়েছে এবং মামলার অনুমোদন দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।



