চট্টগ্রামে পানি চুরি করেই মাসে ৫ কোটি টাকা মেরে দিচ্ছে ওয়াসার চক্র, নষ্ট মিটারে চুরির বড় ফাঁদ

৬ মাসে ২৪ হাজার মিলিয়ন লিটার পানিই ‘সিস্টেম লস’

মাত্র ৬ মাসে চট্টগ্রাম ওয়াসা পানি উৎপাদন করেছে ৮১ হাজার ৫৫৮ মিলিয়ন লিটার। যার পুরোটাই গ্রাহকের কাছে বিতরণ করা হয়েছে বলে কাগজেকলমে দেখানো হলেও এর মধ্যে ২৪ হাজার ৩৫ মিলিয়ন লিটার পানি উড়ে গেছে হাওয়ায়, যার কোনো বিলই হয়নি। ওয়াসা ‘সিস্টেম লস’ দেখিয়ে এই পুকুরচুরি হালাল করে নিয়েছে। এভাবে প্রতি মাসেই একই চিত্র, ঘটছে একই কায়দায় কোটি কোটি টাকার পানি চুরির ঘটনা। এভাবে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওয়াসার মিটার রিডারসহ দুর্নীতিবাজ একটি চক্র।

মিটারেই যেন চট্টগ্রাম ওয়fসার সর্বনাশ। পানি ব্যবহারের হিসাব নিতে গ্রাহকের কাছে বসানো মিটারই হয়ে উঠেছে চুরির বড় ফাঁদ। ব্যক্তিপর্যায়ে লাগানো ওয়াসার বেশিরভাগ মেকানিক্যাল মিটারের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে অনেক মিটার। এই সংখ্যা ওয়াসার হিসেবে ৩ হাজার হলেও ওয়াসার কর্মকর্তারাই জানিয়েছেন বাস্তবে এই সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার। ২০২০-২১ অর্থবছরে পানি বিক্রি করে চট্টগ্রাম ওয়াসার আয় হয়েছে ১৬০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। চুরি না হলে এ আয় দাঁড়াতো ২০০ কোটি টাকারও বেশি।

এমন সব ফাঁকিবাজির সুযোগ নিয়ে ওয়াসার দুর্নীতিবাজ মিটার রিডারদের একটি চক্র রীতিমতো পুকুরচুরির ছক তৈরি করেছে। মিটার রিডারদের সঙ্গে মিলে কিছু গ্রাহকও যুক্ত এই দুই নম্বরিতে। খোদ ওয়াসা চেয়ারম্যানই বলছেন, চুরির এই চক্রে পড়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার অর্জন ধূলিসাৎ হতে চলেছে।

জানা গেছে, এভারেজ ও মিনিমাম বিলে ‘সিস্টেম লস’ বাড়ছেই। চট্টগ্রাম ওয়াসায় বর্তমানে সিস্টেম লসের পরিমাণ ৩০ থেকে ৩১ শতাংশ। যার বড় অংশই মূলত চুরি। অন্যদিকে মিটার নষ্ট হলে আবার নতুন মিটার লাগাতে গেলে তাতেও রয়েছে বড় অংকের খরচ। খোদ মিটার রিডাররাই নতুন মিটারের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেন গ্রাহককে।

এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পাইলট প্রকল্পের আওতায় তিন হাজার মিটার বসানোর উদ্যোগ ওয়াসা নিলেও তা সবেমাত্র দরপত্র আহবান পর্যায়ে আছে। জানা গেছে, গত ১১ জানুয়ারি এ বিষয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ৩০ জানুয়ারি সেই দরপত্র গ্রহণ সম্পন্নও হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, অটোমেটেড মিটার রিডিং ফিচারের স্মার্ট ওয়াটার মিটার সরবরাহের পাশাপাশি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও পালন করতে হবে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে।

পাইলট প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে চলতি বছরের জুন নাগাদ ৩ হাজার পানির সংযোগে স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হবে। শুরুতে নগরীর মেহেদীবাগ ও গোলপাহাড় এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব হবে এই ডিজিটাল মিটারে। এছাড়া অনলাইনে বিল দেওয়ার জন্য পেমেন্ট গেটওয়েও থাকবে ডিজিটাল এই সিস্টেমে। পাইলট প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সবগুলো সংযোগকে এর আওতাভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম।

তবে প্রকল্পটি নিয়ে হতাশার কথাই শোনালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা। তাদের অভিমত, ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের সবেমাত্র দরপত্র সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে তিন হাজার গ্রাহক এ প্রকল্পের আওতায় আসবে। ৭৮ হাজার গ্রাহককে এ প্রকল্পের আওতায় এনে পানি চুরি বন্ধ করা দুরাশা বলেই মনে করছেন তারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার ৭৮ হাজার গ্রাহকের সকলেই মূলত মেকানিক্যাল মিটার ব্যবহার করে থাকেন। গ্রাহকের কাছে গিয়ে এসব মিটার থেকে প্রতি মাসে ব্যবহৃত রিডিং সংগ্রহ করে বিল করে ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের ইন্সপেক্টররা। যাদের পদবি মিটার রিডার। এই ৪১ জন মিটার রিডারের মধ্যে অন্তত ২৫ জনই আবার সিবিএ নেতা। তারা সরাসরি চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি কর্তৃক পদায়নকৃত। এমডির ‘প্রিয়ভাজন’ ও সিবিএ নেতা হওয়ার সুবাদে তারা ইচ্ছেমত ‘বদি আলম’ বা বহিরাগত সহকারী রেখে অফিসে বসে বিল তৈরি করে থাকেন। চট্টগ্রাম ওয়াসায় এরকম অন্তত ২০ জন ‘বদি আলম’ আছেন মিটার রিডারদের সহকারী হিসেবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনায়েত নামের একজন মিটার রিডার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘৭৮ হাজার গ্রাহকের জন্য মাত্র ৪১ জন মিটার রিডার আছে। আমরা এত কম লোকবল দিয়ে কাজ করতে পারি না বলে সহকারী (বদি আলম নামে পরিচিত) রেখেছি। আর মিটার নষ্ট গ্রাহকের। সেই নষ্ট মিটার দেখতে গ্রাহকের বাড়ি যাওয়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তাই আমরা অফিসে বসেই এভারেজ বিল করে থাকি।’

এদিকে মিটার দেখে রিডিং না করা ও নষ্ট মিটারের সুবাদে গ্রাহকেরও হয়েছে পোয়াবারো। মিটার খুলে রেখে অনেক গ্রাহকই করছেন পানি চুরি। আবার গ্রাহকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মিটার রিডাররা এভারেজ বিল করে গ্রাহকদের কাছ থেকে নিচ্ছেন নির্দিষ্ট মাসোহারা। আর এসব কারণেই বাড়ছে কথিত ‘সিস্টেম লস’।

গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি ব্যবস্থাপনার হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম ওয়াসায় পানি উৎপাদিত হয়েছে ১৩ হাজার ৪৮৯ ‍মিলিয়ন লিটার। এর মধ্যে বিতরণ দেখানো হয়েছে সবটুকুই। বিল হয়েছে ৯ হাজার ৩৮৭ মিলিয়ন লিটার পানির। নতুন সংযোগে মিনিমাম বিল হয়েছে ২৮৯ মিলিয়ন লিটার পানির। সবমিলিয়ে মোট বিল হয়েছে ৯ হাজার ৬৬৭ মিলিয়ন লিটার পানির। অন্যদিকে কোনো বিলই হয়নি ৪ হাজার ১০২ মিলিয়ন লিটার পানির— যা বিতরণ করা মোট পানির ২৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাষ্যমতে, এই ৪ হাজার ১০২ মিলিয়ন লিটার পানি ‘সিস্টেম লস’।

ওই বছরের আগস্টে উৎপাদিত ১৩ হাজার ৭৫১ মিলিয়ন লিটার পানির মধ্যেও বিতরণ দেখানো হয়েছে সবটুকুই। এর মধ্যে বিল হয়েছে ৯ হাজার ১৬৪ মিলিয়ন লিটার পানির। নতুন সংযোগে মিনিমাম বিল হয়েছে ৩৬৮ মিলিয়ন লিটার পানির। সবমিলিয়ে মোট বিল হয়েছে ৯ হাজার ৫৩২ মিলিয়ন লিটার পানির। অন্যদিকে কোনো বিলই হয়নি ৪ হাজার ২১৯ মিলিয়ন লিটার পানির— যা বিতরণ করা মোট পানির ৩১ শতাংশ। চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাষ্যমতে, এই ৪ হাজার ২১৯ মিলিয়ন লিটার পানিই ‘সিস্টেম লস’।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উৎপাদিত ১৩ হাজার ৬৩৬ মিলিয়ন লিটার পানির সবটুকুই বিতরণ দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে বিল হয়েছে ৯ হাজার ৬২ মিলিয়ন লিটার পানির। নতুন সংযোগে মিনিমাম বিল হয়েছে ২৮১ মিলিয়ন লিটার পানির। সবমিলিয়ে মোট বিল হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৩ মিলিয়ন লিটার পানির। অন্যদিকে কোনো বিলই হয়নি ৪ হাজার ২৯৩ মিলিয়ন লিটার পানির— যা বিতরণ করা মোট পানির ৩১ শতাংশ। চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাষ্যমতে, বিল না হওয়া এই বিপুল পরিমাণ পানিই ‘সিস্টেম লস’।

অক্টোবর মাসে উৎপাদিত ১৩ হাজার ৬৮৯ মিলিয়ন লিটার পানির মধ্যে বিতরণ দেখানো হয়েছে সবটুকুই। এর মধ্যে বিল হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৫ মিলিয়ন লিটার পানির। নতুন সংযোগে মিনিমাম বিল হয়েছে ৩০৯ মিলিয়ন লিটার পানির। সবমিলিয়ে মোট বিল হয়েছে ৯ হাজার ৭৮৪ মিলিয়ন লিটার পানির। অন্যদিকে কোনো বিলই হয়নি ৩ হাজার ৯০৫ মিলিয়ন লিটার পানির— যা বিতরণ করা মোট পানির ২৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাষ্যমতে, বিল না হওয়া এই বিপুল পরিমাণ পানিই ‘সিস্টেম লস’।

নভেম্বর মাসে উৎপাদিত ১৩ হাজার ৩৭৪ মিলিয়ন লিটার পানির মধ্যে বিতরণ দেখানো হয়েছে সবটুকুই। এর মধ্যে বিল হয়েছে ৯ হাজার ৪৮১ মিলিয়ন লিটারের। নতুন সংযোগে মিনিমাম বিল হয়েছে ২০৬ মিলিয়ন লিটার পানির। সবমিলিয়ে মোট বিল হয়েছে ৯ হাজার ৬৮৭ মিলিয়ন লিটার পানির। অন্যদিকে কোনো বিলই হয়নি ৩ হাজার ৬৮৭ মিলিয়ন লিটার পানির— যা বিতরণ করা মোট পানির ২৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাষ্যমতে, বিল না হওয়া এই বিপুল পরিমাণ পানিই ‘সিস্টেম লস’।

সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ১৩ হাজার ৬১৯ মিলিয়ন লিটার উৎপাদিত পানির মধ্যে বিতরণ দেখানো হয়েছে ১৩ হাজার ৬১৯ মিলিয়ন লিটারই। এর মধ্যে বিল হয়েছে ৯ হাজার ৫০৭ মিলিয়ন লিটার পানির। নতুন সংযোগে মিনিমাম বিল হয়েছে ২৮৩ মিলিয়ন লিটার পানির। সবমিলিয়ে মোট বিল হয়েছে ৯ হাজার ৭৯০ মিলিয়ন লিটার পানির। অন্যদিকে কোনো বিলই হয়নি ৩ হাজার ৮২৯ মিলিয়ন লিটার পানির— যা বিতরণ করা মোট পানির ২৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাষ্যমতে, বিল না হওয়া এই বিপুল পরিমাণ পানিই ‘সিস্টেম লস’।

চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, সংস্থাটির মোট ৭৮ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে ১২ শতাংশ অনাবাসিক আর ৭৮ শতাংশ আবাসিক গ্রাহক। চট্টগ্রাম ওয়াসায় উৎপাদিত পানি সরবরাহের জন্য মোট পাইপলাইন রয়েছে ৯৬২ কিলোমিটার। এর মধ্যে পুরোনো বা নষ্ট পাইপলাইন ৩৩২ কিলোমিটার।

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, পাইপলাইন পুরোনো থাকায় অনেক সময় পাইপ ফুটো হয়ে ময়লা পানি গিয়ে মেকানিক্যাল মিটার আর প্রকৃত রিডিং জানাতে পারে না। যার ফলে রিডিংয়ে সঠিক তথ্য আসে না। অন্যদিকে বাড়ির মালিক ও কেয়ারটেকাররা বেশি বিলের ভয়ে রাতের বেলা মিটার খুলে রাখে। আর এই মেকানিক্যাল মিটার খুলে রেখে ট্যাংকিতে পানি ভরে আবার খুব সহজে পুনরায় মিটার লাগিয়ে ফেলা হয় ঠিক আগের জায়গায়।

চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের হিসেবে নষ্ট মিটারের সংখ্যা ৩ হাজার। কিন্তু গোপন সূত্রে জানা গেছে, এ সংখ্যা প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজারের কাছাকাছি।

জানা গেছে, মিটার নষ্ট জেনেও সেই মিটার ঠিক করার তাগাদা দেন না মিটার রিডাররা। মিটার রিডার ও গ্রাহকের এক্ষেত্রে রয়েছে গোপন যোগসাজশ। মিটার নষ্ট থাকলেও ইচ্ছেমতো বাড়ির মালিক ও কেয়ারটেকার পানি টানলেও তার সঠিক রিডিং উঠে আসে না মিটারে। এক্ষেত্রে বাড়ির মালিকের সাথে বড় অংকের মাসোহারা একটা চুক্তি করে মিটার রিডাররা। এক্ষেত্রে এসব বাড়ির মালিকরা সচরাচর একটা ‘এভারেজ’ বিল পান।

আবার যেসব মিটার ভালো রয়েছে, সেসব মিটারের ক্ষেত্রেও রিডিং দেখে বিল না করার অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে মিটার রিডার বিল করার আগে মিটার রিডিং দেখতে যান না গ্রাহকের বাড়িতে। এখানেও ‘এভারেজ’ বিল করে দেওয়া হয় অফিসে বসে। মিটার রিডারদের বহিরাগত সহকারী ‘বদি আলমে’র দল গিয়ে গ্রাহকের বাসায় বিল দিয়ে মাসোহারার টাকা নিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে বাড়ির মালিকরা তো বটেই, মিটার রিডাররাও লাভবান হন। আর রাজস্ব হারায় ওয়াসা।

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসায় পানির নতুন বিলিং রেট কার্যকর হয়েছে। নতুন হার অনুসারে, আবাসিকে ১ হাজার গ্যালন পানির দাম ৫৯ দশমিক ১৯ টাকা। অনাবাসিকে ১ হাজার গ্যালন পানির দাম ১৪৪ টাকা ৬৫ পয়সা। আবাসিকে প্রতি কিউবিক মিটার পানির দাম ১৩ টাকা ২ পয়সা। অনাবাসিকে প্রতি কিউবিক মিটার পানির দাম ৩১ দশমিক ৮২ পয়সা।

এদিকে নষ্ট মিটার পরিবর্তনে বাড়তি ফির কারণে গ্রাহকরাও নিরুৎসাহিত হন। জানা গেছে, ৩-৪ ইঞ্চি ব্যাস সাইজের মিটার পরিবর্তন ফি ৪ হাজার টাকা। চুরির মিটারের ক্ষেত্রে সেটি ৬ হাজার টাকা। ১ ইঞ্চি ব্যাসের মিটার পরিবর্তনের ফি ৫ হাজার ৫০০ টাকা। চুরির মিটারে সেটি ৭ হাজার ৫০০ টাকা। ২ ইঞ্চি ব্যাসে ১৮ হাজার টাকা। চুরির মিটারে সেটি ২৫ হাজার টাকা। ৪ ইঞ্চি ব্যাসে ২৫ হাজার টাকা। চুরির মিটারের ক্ষেত্রে সেটি ৩৫ হাজার টাকা। ৬ ইঞ্চি ব্যাসে ৩৫ হাজার টাকা। চুরির মিটারের ক্ষেত্রে সেটি ৪৫ হাজার টাকা। ৮ ইঞ্চি ব্যাসে ফি ৪৫ হাজার টাকা। চুরির মিটারের ক্ষেত্রে সেটি ৫৫ হাজার টাকা।

অন্যদিকে মিটার পুনঃসংযোগ ফি ১ মাসের মধ্যে আবাসিক ২০০ টাকা, অনাবাসিক ৪০০ টাকা। ৬ মাসের মধ্যে ৪০০ টাকা আবাসিক, অনাবাসিক ৮০০ টাকা। ১ বছরের মধ্যে ৭০০ টাকা, অনাবাসিক ১৫০০ টাকা। ২ বছরের মধ্যে ২১০০ টাকা, অনাবাসিক ৪৫০০ টাকা। ২ বছরেরও বেশি আবাসিক ৪ হাজার ২০০ টাকা, অনাবাসিক ৯ হাজার টাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, যেসব সচেতন ও সৎ গ্রাহক রিডিং বেশি হওয়ার ভয়ে হিসাব করে পানি খরচ করে, তারাও এভারেজ বিলের আওতায় পড়ে মিটার রিডারের এসব কারসাজিতে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শুধুমাত্র মেকানিক্যাল মিটারের কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসার অর্জন হুমকির মুখে। গ্রাহকদের অসন্তোষ কমছে না। কমছে না মিটার রিডারদের দুর্নীতি। নতুন পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার পর স্মার্ট মিটারের আওতায় আসলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

সিবিএ নেতাদের মিটার রিডার হিসেবে পদায়ন প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি বলেন, ‘এসব অপপ্রচার। যে যার যোগ্যতা দিয়ে নিজের পদে আছে। আসলে এসব বলে সবসময়ই ওয়াসায় আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হয়।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!