২২ বছরের কিশোরী লায়লা বেগম (ছদ্মনাম)। কাজ করতেন বায়েজিদ এলাকার একটি গার্মেন্টস কারখানায়। সেই কারখানায় এক নারী শ্রমিকের সঙ্গে সখ্যতা হয় লায়লার। ওই সহকর্মীই লায়লাকে স্বপ্ন দেখান ভারতে বেশি বেতনের চাকরির। সহকর্মীর কথায় ভারত গেলেও স্বপ্নপূরণ হয় না লায়লার। এরপর লায়লা বুঝতে পারেন, তিনি পাচার হয়েছেন।
পাচার হওয়ার কয়েক মাস পর কৌশলে ভারত থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন লায়লা। এরপর পুলিশকে বললে মানবপাচার চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে বায়েজিদ থানা পুলিশ। চক্রের বাকি সদস্যদের খুঁজছে পুলিশ। এই মানবপাচারে জড়িত স্বামী-স্ত্রী’র একটি সিন্ডিকেট।
রোববার (২৩জুন) মধ্যরাতে বায়েজিদ থানার চন্দ্রনগর এলাকার একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে মানবপাচার চক্রের সদস্য মো. তারেককে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তারেক ভুক্তভোগী লায়লার ওই সহকর্মীর স্বামী। অভিযানের স্বার্থে পুলিশ তারেকের স্ত্রীর নাম বলতে রাজি হননি।
তারেক বাঁশখালী থানার পুকুরিয়া ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া এলাকার আহমদ ছাফার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারেক ও তার স্ত্রী গার্মেন্টসে চাকরিরত কিশোরীদের টার্গেট করেন। এসব কিশোরীদের ভারতে নিয়ে বেশি বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখানো হয়।
তারেকের স্ত্রী গার্মেন্টসে চাকরির করার ফাঁকে কিশোরীদের সাহায্য করার কথা জানিয়ে স্বামী তারেকের কাছে নিয়ে আসেন। সেখানে আগে থেকেই ভাড়া করা কিছু মেয়ে থাকে, যারা ভারতে গিয়ে ভালো চাকরি করছে বলে তারেকদের পক্ষে সাফাই গান। সেসব শুনে যারাই ভারত যাওয়ার ইচ্ছাপোষণ করেন, তাদের তারেক বাসে করে যশোর সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে যান।
পরে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে কিশোরীদের যৌনপল্লীগুলোতে বিক্রি করে দিয়ে চলে আসেন তারেক।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, এক কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তারেক নামের মানবপাচার চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করি। এই চক্রের সদস্য তারেকের স্ত্রীসহ বাকিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
তারেকের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
বিএস/ডিজে