চট্টগ্রামে নতুন ঘর পাচ্ছে ১ হাজার ২১৬ পরিবার

তৃতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন ১ হাজার ২১৬টি পরিবারকে ঈদ উপহার হিসেবে জমিসহ দেওয়া হচ্ছে মুজিব বর্ষের ঘর।

আনোয়ারা উপজেলার ৬ নম্বর বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্পে আগামী ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘর প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এসব কথা বলেন।

‘মুজিবশতবর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’౼প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১ম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সারাদেশে ৬৯ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নোয়াখালী সফরে গিয়ে আশ্রয়হীনদের প্রথম পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে আশ্রয়হীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেন ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’। জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর কন্যা দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাসস্থান নিশ্চিতের ঘোষণা দেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি এবং গৃহ প্রদানের এ নজির পৃথিবীর বুকে অনন্য। একসাথে একই দিনে এতসংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমিসহ ঘর দেওয়ার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। ২য় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ অনন্য উদ্যোগে এখন শামিল হবার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা এগিয়ে এসেছেন। ইতোমধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলায় ১২০টি ঘর নির্মাণ শেষ হয়েছে। এছাড়া বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প খাতে অর্থ অনুদান দিচ্ছেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৩য় পর্যায়ে আগামী ২৬ এপ্রিল সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৩য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্ধারিত নমুনা ও ডিজাইন অনুসরণ করে উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে এসকল টেকসই এবং মানসম্মত ঘর ভূমিহীন এবং গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলায় ৮৫টি, কর্ণফুলী উপজেলায় ১০টি, আনোয়ারা উপজেলায় ১৩০টি, বোয়ালখালী উপজেলায় ৪৫টি, চন্দনাইশ উপজেলায় ৬৫টি, সাতকানিয়া উপজেলায় ২৮টি, লোহাগাড়া উপজেলায় ১৪৫টি, বাঁশখালী উপজেলায় ১২০টি, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৭০টি, রাউজান উপজেলায় ৫৬টি, হাটহাজারী উপজেলায় ২৪টি, ফটিকছড়ি উপজেলায় ৩৯০টি, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ২৮টি, মীরসরাই উপজেলায় ২০টিসহ ১ হাজার ২১৬ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মাসুদ কামাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ উল্লাহ মারুফ।

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm