চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘নতুনভাবে সংক্রমণ বাড়াতে সক্ষম’— এমন কোনো করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি নেই বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। আগে থেকে যে তিনটি ভ্যারিয়েন্ট চট্টগ্রামে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছিল, সেসব ভ্যারিয়েন্টের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য মিউটেশন পাওয়া যায়নি বলেও জানান তারা।
সিভাসু কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবের গবেষকরা গত জুন ২০২০ থেকে জুলাই ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই ল্যাবে পরীক্ষাকৃত নমুনাসমূহের মধ্যে ৩০০ টি কোভিড-১৯ পজিটিভ নমুনার স্পাইক প্রোটিনের সিকোয়েন্সিং এবং এদের মিউটেশন বিশ্লেষণ করে করা এক গবেষণা শেষে এসব তথ্য জানান।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে এই গবেষণাদলে ছিলেন সিভাসুর অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ডা. ত্রিদীপ দাশ, মলিকুলার বায়োলজিস্ট ডা. প্রানেশ দত্ত, ডা. সিরাজুল ইসলাম এবং ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে আমাদের গবেষণার উদ্দেশ্য ছিলো-ঐ সব নমুনার স্পাইক প্রোটিনের জিন সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য মিউটেশন এবং উচ্চ সংক্রমণ করতে সক্ষম এমন করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্তকরণ।
এসব নমুনায় কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় এসব নমুনার স্পাইক প্রোটিনের সিকোয়েন্সিং এবং এদের মিউটেশন বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় যে, ৬৭টি নমুনার স্পাইক প্রোটিনের মধ্যে মিউটেশন রয়েছে, যার মধ্যে নিউক্লিওটাইডের সিঙ্গেল মিউটেশন হয়েছে ৪৩টি নমুনায় ও একের অধিক নিউক্লিওটাইডের মিউটেশন হয়েছে ২৪টি নমুনায়। এসব মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের ৪৯টি বিভিন্ন স্থানে এমাইনো এসিডের পরিবর্তন হয়েছে। তবে বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, এ দ্বারা স্পাইক প্রোটিনের গঠনের উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
গবেষকদলের সদস্য ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু এসব নমুনার মিউটিশনের ক্ষেত্রে কোনো বলার মত পরিবর্তন পাওয়া যায়নি। সেহেতু এটা নিশ্চিত যে চট্টগ্রামে নতুন কোন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি নেই। কারণ নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভবই হয় আগের ভ্যারিয়েন্টের মিউটেশনের মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, ‘মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের ক্রমাগত পরিবর্তন ভ্যাকসিন এবং এন্টিভাইরাল ড্রাগের কার্যকারিতায় ও বৈচিত্র্য নিয়ে আসে। গবেষণায় স্পাইক প্রোটিনের যা সামান্য মিউটেশন আমরা পেয়েছি এ ধরনের মিউটেশন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতায় কোন প্রভাব ফেলবে না।’
এআরটি/সিপি