চট্টগ্রামে দেড় লাখ নতুন ভোটারের আবেদন ঝুলে আছে, মিলছে না এনআইডিও

সারা দেশে ঝুলে আছে ১১ লাখ আবেদন

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অনলাইনে আবেদন জমা পড়ে আছে ১১ লাখ ১৪ হাজার ৩৩ জনের। নানা জটিলতায় এসব আবেদন ঝুলে আছে ইসির সেন্ট্রাল সার্ভারে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে করা হয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৫৬টি আবেদন। তবে সবচেয়ে বেশি আবেদন ঝুলে আছে ঢাকা, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের জেলাগুলোয়। এভাবে আবেদন ঝুলে থাকায় চরম ভোগান্তির মধ্যে আছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন কাজে বাধ্যতামূলক হলেও শুধু ভোটার তালিকায় নাম না ওঠার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) পাচ্ছে না। এটা আরও বেশি হয়রানিতে ফেলছে মানুষকে।

এভাবে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের ১১ লাখেরও বেশি আবেদন নির্বাচন কমিশনে ঝুলে থাকায় তারা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাচ্ছেন না। অথচ করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, বিদেশ যাওয়াসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় এই বিপুলসংখ্যক মানুষ এসব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এর মধ্যেই বুধবার (২ মার্চ) ভোটার দিবসে দেশের ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছেন ১৪ লাখ ২ হাজার ৫০৬ জন নতুন ভোটার। ২০১৯ সালে নির্বাচন কমিশন যখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছিল, তখন এই ১৪ লাখ ভোটারের বয়স ছিল ১৬ বছর। এখন তাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারা ভোটার তালিকায় ঢুকে যাচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশনের এক সমন্বয় সভায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর জানান, বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের সেন্ট্রাল সার্ভারে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ১১ লাখ ১৪ হাজার ৩৩টি আবেদন ঝুলে রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৫৬টি, বরিশাল অঞ্চলে ৩৯ হাজার ৯০৯টি, কুমিল্লায় ২ লাখ ২ হাজার ৬৮০টি ও ঢাকা অঞ্চলে ২ লাখ ৯ হাজার ৮৮টি আবেদন রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ অঞ্চলে ১ লাখ ৪৫ হাজার ১৬৪টি, রাজশাহীতে ৮০ হাজার ২১৪টি, রংপুরে ৭৫ হাজার ৯৮৪টি, সিলেটে ৭৫ হাজার ৮৮৯টি, ফরিদপুরে ৫৩ হাজার ৮৭১টি এবং খুলনা অঞ্চলে ৮৮ হাজার ৭৪টি আবেদন ঝুলে রয়েছে।

করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গত দুই বছর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেনি কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ফলে ১৮ বছর পূর্ণ হলেও বিপুলসংখ্যক মানুষ ভোটার তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন। আবার ভোটার তালিকায় না ওঠার কারণে এরা জাতীয় পরিচয়পত্রও পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, দুই বছর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ না করায় নির্বাচন অফিসগুলোয় নতুন ভোটার হতে আগ্রহীদের চাপ বেড়েছে। কারণ বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র দরকার হচ্ছে বেশি, তারাই মূলত ভোটার হতে অনলাইন ও সরাসরি নির্বাচন অফিসগুলোয় গিয়ে— দুই পদ্ধতিতেই আবেদন করছেন নির্বাচন কমিশনে। এর বাইরে বাকিরা আসছেন না। তবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করলে বাকিরাও ভোটার তালিকার আওতায় চলে আসবেন।

জানা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন ১৯ লাখ ১০ হাজার ৪৭৩ জন। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে ভোটার হয়েছেন।

এদিকে জানা গেছে, কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশনের কাছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরুর প্রস্তাব অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপস্থাপন করবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm