চট্টগ্রামে তিন মামলার জালে বিএনপির ১৫০ নেতাকর্মী, গ্রেপ্তার ১০

কোতোয়ালীর ওসির বিরুদ্ধে শাহাদাতের অভিযোগ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সংঘাত ও হামলার অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় বিএনপির প্রায় ১৫০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দায়ের করলেও অন্য মামলাটি দায়ের করেছেন পাহাড়তলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন অফিস সহকারী। এসব মামলায় মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে কোতোয়ালী থানাধীন কাজীর দেউড়ি মোড়ের ঘটনার জন্য কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে দায়ী করে তার অপসারণ দাবি করেছেন শাহাদাত হোসেন। ওসি নেজামকে অপসারণ না করলে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) নগরীর কোতোয়ালী, বাকলিয়া ও আকবর শাহ থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।

এর মধ্যে বাকলিয়া ও কাজীর দেউড়ি মোড়ে সংঘাতের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাদের দায়ের করা দুই মামলায় ৫৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে পাহাড়তলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিস সহকারী বাপ্পু কুমার দাশের দায়ের করা মামলায় ৮১ জনকে আসামি করা হয়। পাহাড়তলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের সময় জোর করে সেখানে ঢুকে হামলার অভিযোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন বাপ্পু।

এই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পাহাড়তলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ১৮ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ চলছিল। বুধবার দুপুরে বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী শাহাদাত হোসেন কলেজের সামনে দিয়ে গণসংযোগ করে যাওয়ার সময় কলেজে ঢোকার চেষ্টা করেন। এসময় কলেজ অধ্যক্ষ তাকে প্রশিক্ষণের কথা বললে তিনি চলে যান। তবে ওই প্রচারণা মিছিলের পেছনে থাকা তার সমর্থকরা জোর করে কলেজে ঢুকে দরজা-জানালা ভাংচুর করে ।

আকবর শাহ থানার ওসি জহির হোসেন জানান, মামলার পর পুলিশ এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলেন মো. মুরাদ (৩২) এবং আব্দুল মাবুদ (৩৭) প্রকাশ জুনিয়র মাবুদ।

এছাড়া নগরীর নূর আহমদ সড়কে বিএনপি কার্যালয়ের পাশে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুরের অভিযোগে বিএনপির ৩৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন নগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোশারুফুল হক চৌধুরী পাভেল। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন— আলী হাসান রাজু (৪৫), কায়সার (৪০), নাছির (৪৫) এবং মিন্টু প্রকাশ মিনু (৩৭)।

এর আগে একই দিন বিকালে বাকলিয়া থানার বলিরহাটে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী রেজাউল করিমের নির্বাচনী প্রচারণার সময় হামলার অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানান বাকলিয়া থানার ওসি রুহুল আমিন। এই ঘটনায়ও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজন এজাহারভুক্ত আর দুইজন পুলিশের তদন্তে পাওয়া আসামি বলে জানান ওসি রুহুল আমিন।

অন্য দুই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও কোতোয়ালীর ঘটনার জন্য ওসি নেজাম উদ্দিনকে দায়ী করে তার অপসারণ দাবি করেছেন বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর লাভ লেইনে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে ওসি নেজাম উদ্দিন ও বাকলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জামানকে প্রত্যাহারের মৌখিক দাবি জানান শাহাদাত।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!