চট্টগ্রামে ড্রাগন ফলছে বাল্বের আলোয়, অফসিজনেও আসছে সুফল

এবার বৈদ্যুতিক লাইটের আলোর মাধ্যমে শীত মৌসুমে বা অফ সিজনে ড্রাগন ফল উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন চট্টগ্রামের কৃষি গবেষকরা। গত তিন বছরের গবেষণা সফল হওয়ার পর এখন এই পদ্ধতি বাণিজ্যিকীকরণের প্রক্রিয়া চলছে। অফ সিজনে ড্রাগন ফল উৎপাদন করে কৃষকরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভবান হবেন বলে মনে করছেন গবেষকরা।

চট্টগ্রামে ড্রাগন ফলছে বাল্বের আলোয়, অফসিজনেও আসছে সুফল 1

ড্রাগন ফল সাধারণত গ্রীষ্ম মৌসুমে চাষ হয়। কারণ ড্রাগন চাষে প্রয়োজন সূর্যের আলো। সূর্যের আলো কম থাকলে ড্রাগন ফুল থেকে ফল হয় না। মূলত বছরের এপ্রিলে শুরু হয় গাছে ফুল আসা। আর অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হয় ড্রাগন ফলের মৌসুম। তবে চট্টগ্রামের কৃষি গবেষকরাই শীত মৌসুমে ড্রাগন ফল উৎপাদনে বিশেষ সফলতা পেয়েছেন।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা শীতের মৌসুমে ড্রাগ চাষে বেছে নেন কৃত্রিম আলোর পদ্ধতি। দিনের আলোর পর সন্ধ্যা থেকে মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালিয়ে সফলও হয়েছেন তারা। এক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করেছেন এলইডি লাইট ও টাংস্টেন ফিলামেন্ট বাল্ব। তবে এখানে টাংস্টেন ফিলামেন্ট বাল্বেই বেশি সুফল পেয়েছেন গবেষকরা।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীর কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একটি প্লটে ৪৯টি পিলারে লাইটিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। সুতার জালে ঘেরা বাগানের প্রতিটি গাছেই ঝুলছে ড্রাগন ফল এবং ফুল। কিছু ফল তোলার সময়ও হয়েছে।

চট্টগ্রাম কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম হারুনর রশীদ বলেন, শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক লাইটের আলো ব্যবহার করে অফ সিজনে ড্রাগন ফল উৎপাদন করা হচ্ছে। অফ সিজনে কীভাবে উৎপাদন করা যায় এর গবেষণা চালিয়ে আমরা সফল হয়েছি। এখন এই পদ্ধতি প্রান্তিক কৃষকদের প্রয়োগ করার সময় এসেছে। বিগত তিন-চার বছর আমি এই পদ্ধতিতে শীতকালে ড্রাগন ফল উৎপাদন করেছি। এখন যে কেউ এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে সুফল পাবে।

তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ বাড়ির ছাদেও ছোট পরিসরে ড্রাগন ফল বাগান করছেন। তারাও এ পদ্ধতি অবলম্বন করে সুফল পেতে পারেন।

ড. এএসএম হারুনর রশীদ বলেন, ড্রাগন ফলের জন্য দীর্ঘসময় সূর্যের আলোর প্রয়োজন। বছরের যে সময় সূর্যের আলো কম থাকে সে সময় ড্রাগন ফুল ফলে রূপান্তর হয় না। তাই সূর্যের আলোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে হয় বৈদ্যুতিক লাইটের আলো। এজন্য প্রতিটির সারিতে লাইন টেনে বাল্ব ঝুলিয়ে দিতে হয়। এমন লাইন টানতে হয় যাতে একটি পিলারের চারপাশ থেকে আলো পড়ে।

গবেষকদের তথ্যমতে, শীত মৌসুমে গাছগুলো পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পায় না। যে কারণে এ সময়ে ফুল কিংবা ফল কিছুই পাওয়া যায় না। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ১০০ ওয়াটের লাইট জ্বালিয়ে ড্রাগন উৎপাদন করা হচ্ছে। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে যদি ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায় তাহলে গ্রীষ্ম মৌসুমের চেয়ে শীতকালেই বেশি লাভ হবে। একইসঙ্গে অফ সিজনে ড্রাগন উৎপাদন করলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!