চট্টগ্রামের রাউজানে এক চিকিৎসককে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও অপহরণের মামলায় দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সহিদুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দিয়েছেন।
তিন আসামি আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এর মধ্যে পাইওনিয়ার হাসপাতালের পরিচালক মনজুর হোসেন ও সুপারভাইজার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্যদিকে পাইওনিয়ার হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. ফজল করিম প্রকাশ বাবুলের জামিন মামলার প্রতিবেদন জমা পর্যন্ত মঞ্জুর করা হয়।
এর আগে এই তিন আসামি হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্ট তাদের আট সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুনের আদালতে জাহাঙ্গীর আলম ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও অপহরণের অভিযোগে রাউজান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও এক চিকিৎসকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা আবেদন করেন। পরদিন রাউজান থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলা হিসেবে মামলাটি রেকর্ড করার নির্দেশ দেন আদালত।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন— রাউজান থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই টোটন মজুমদার ও এসআই শাফায়েত আহমদ।
ঘটনার শিকার চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমের দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল রাউজান থানার নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকার চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমকে সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে যান রাউজান থানার এসআই টোটন মজুমদার। জাহাঙ্গীরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে মারধর করা হয়। এর আগে টোটন ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ওই চিকিৎসকের কাছে। টাকা না দিলে ক্রসফায়ারে হুমকি দেন। চিকিৎসকের অপরাধ তিনি বিএনপি করেন।
পরে পুলিশের সহযোগিতায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। সেখানে অভিযোগ দেওয়া হয়, একটি ডায়গনস্টিক সেন্টারের গাড়িচালক রাসেলের কাছ থেকে তিনি ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু পরে রাসেল আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান চিকিৎসক জাহাঙ্গীর নামের কাউকে তিনি চেনেন না। তার কাছ থেকে কেউ টাকা নেয়নি। গত ২৯ আগস্ট আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।