বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা। নগরীর পাঁচলাইশ, বাকলিয়া ও চান্দগাঁও থানার অধিকাংশ এলাকা এখন পানির নিচে।
এসব এলাকার বেশিরভাগ ভবনের নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। রোববার (১৯ জুন) রাত দুইটা থেকেই বিদ্যুৎ নেই এসব এলাকায়। বিদ্যুৎ না থাকার ফলে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সোমবার (২০ জুন) সকাল থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। তিনটার পর আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিকেল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাঁচলাইশের কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা, শুলকবহর, বাকলিয়ার রাহাত্তারফুল, খালপাড় ও বড়মিয়া মসজিদ এলাকায় হাটু থেকে কোমড় পর্যন্ত পানি দেখা গেছে।
এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, আগে কখনো এতোদিম জলাবদ্ধতা স্থায়ী হয়নি। বাসায় পানি উঠলেও দ্রুত নেমে যেত। কিন্তু এখন পানি নামছে না। এই জলাবদ্ধতার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
তাদের দাবি, সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করছে সিডিএ। প্রকল্পের কাজে বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দিয়েছে সিডিএ। তার মধ্যে নগরীর পানি প্রবাহের অন্যতম চাক্তাই খাল, ও চশমা খালে একাধিক জায়গায় বাঁধ রয়েছে। যার কারণে পানি নামতে পারছে না। ফলে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
শুলকবহরের বাসিন্দা তপু বিশ্বাস বলেন, ‘বাসার নিচে কোমর সমান পানি। গতকাল রাত দুইটা থেকে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মোটর চালিয়ে পানি তোলা যাচ্ছে না। বাথরুমে পানি নাই। খুব ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি।’
একই এলাকার আকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে বাসার ভিতরে পানি। এখনো হাটু পরিমাণ পানি, সকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ। অথচ পানি স্থবির হয়ে আছে। বাসায় বিদ্যুৎ নেই, খাবার পানি নেই! জন জীবনের এই দুর্যোগ কেউই দেখার মত নেই।’
অন্যদিকে বাকলিয়ার কেবি আমান আলী রোড এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, ‘রাস্তা ডুবে গেছে। রাস্তায় নৌকা চলছে। বিদ্যুৎ নেই। বাসায় পানি নাই। কবে আমাদের এই ভোগান্তি শেষ হবে?’
শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোরশেদ আলম বলেন, ‘আমার ওয়ার্ড কিছু জায়গা পানি রয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি হওয়ায় আধা ঘণ্টা, এক ঘন্টার মধ্যে পানি নেমে যাচ্ছে। এরমধ্যে কারো বাসায় পানি উঠলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজে সিডিএ একাধিক খালে বাঁধ দিয়েছে। এছাড়া খালের বিভিন্ন অংশে মাটির স্তূপ রয়েছে। যার কারণে পানি নামতে দীর্ঘ সময় লাগছে। সিডিএ’র কাছে অনুরোধ থাকবে, জনগণের ভোগান্তি লাগবে তারা সিডিএ যেন বর্ষা মৌসুমে ওই বাঁধ ও মাটি অপসারণ করেন।’
আরএম/এমএফও