চট্টগ্রামে জনপ্রতিনিধিকে অবজ্ঞা করে নির্বাহী কর্মকর্তার ‘ক্ষমতা’র জোর

নিজেদের আইনকেই বুড়ো আঙ্গুল সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তার

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় কর্পোরেশন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে। এ কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের স্থানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে দৃষ্টিকটু এ বিষয়ে কোনো জবাবদিহিতার প্রয়োজন পড়েনি। নিজ বক্তব্যে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম।

বুধবার (১৫ জুন) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় দেখা গেছে, বিশাল মঞ্চ জুড়ে লাগানো হয়েছে ব্যানার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর নাম থাকলেও সভাপতির স্থানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের বদলে নাম ছিল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলমের। তাছাড়া অনুষ্ঠানসূচিতেও নাম ছিল বলে অভিযোগ করেন কাউন্সিলর জসিম।

কর্মশালায় স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি সভাপতিত্ব না করে কেন নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতিত্ব করেছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম বলেন, ‘আমাকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি বানিয়েছেন মেয়র। তবে এটি শুধু কাগজে-কলমেই আছি, কাজে নয়। কারণ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল আলম। তাহলে আমি কেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আছি? বিষয়টি দৃষ্টিকটু ছিল। তাছাড়া অনুষ্ঠানসূচিতেও আমার নাম ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘তবে সেখানে স্থান পেয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী ও উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরীর নাম। সভাপতি হয়ে আমার নাম না থাকায় আমি প্রতিবাদ করেছি। মঞ্চে আমার বক্তব্য দেওয়ার সময় সকলের সম্মুখে বিষয়টি উপস্থাপন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি স্ট্যান্ডিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওমরকে জানানোর পর এ বিষয়ে তার কোনো সদুত্তর ছিল না। পরে আমি আমার বক্তব্যে বিষয়টি তুলে ধরেছি।’

বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন আইন কী বলে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইনত তারা এমন করতে পারে না। স্ট্যান্ডিং কমিটি যেহেতু করেছে। সুতরাং স্ট্যান্ডিং কমিটির যেকোনো প্রোগ্রামে সভাপতিত্ব করতে হবে সভাপতিকে। কর্মশালা শেষে মেয়র বলেন, এটা কাউন্সিলরদের কর্মশালা, এতে প্রধান নির্বাহী কেন সভাপতিত্ব করেছেন? এ কাজটি ঠিক হয়নি। এছাড়া সচিব ও নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা এসব জানেন না বলেন।’

এ বিষয়ে জানতে প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি। ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলে তারও কোনো উত্তর দেননি তিনি।

বিষয়টি জানতে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি একটি বৈঠকে আছি, পরে কথা বলছি’। এরপরই ফোন কল কেটে দেন তিনি।

আরএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm