চট্টগ্রামের হালিশহর সিএসডি ও দেওয়ানহাটের সরকারি গোডাউন থেকে চালবোঝাই তিনটি ট্রাক বের হয়ে যাওয়া কথা ছিল খাগড়াছড়ির তবলছড়ি ও দীঘিনালা এলএসডি’র উদ্দেশ্যে। সেখানে না গিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে বিক্রি করতে ট্রাক তিনটি চাল খালাস করে সীতাকুণ্ড উপজেলা ফারুক ট্রেডিং নামীয় একটি গোডাউনে। খবর পেয়ে চালসহ ট্রাক তিনটি আটক করেছে পুলিশ। এসব চালের ট্রাক সিলগালা না করেই পাঠানো হয় খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্য।
এই সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও একটি চালভর্তি ট্রাক পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বাংলাদেশ সরকার চলাচল ও সংরক্ষক নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের এক আদেশ বলা হয়, প্রতি ট্রাক ও প্রেরিত চালের বিশ্লেষণ বিবরণীসহ নমুনা অবশ্যই যৌথ স্বাক্ষরে সিলগালা করে ঠিকাদার/প্রতিনিধির নিকট দিতে হবে।
কিন্তু আদেশ জারি থাকলেও তা না করে সিএসডি ও এলএসডি কিছু কর্মকর্তা ও পরিবহন ঠিকাদারদের যোগসাজশে সিলগালা না করে চাল বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সরকারের বন্ধকৃত পরিত্যক্ত গোডাউন মর্ডান ন্যাশনাল কটন মিলসে ফারুক ট্রেডিং মালিকানাধীন একটি গোডাউন থেকে এসব চাল আটক করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চালক ও হেলপারসহ সবাই পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ট্রাক থেকে মোট ৪৫ মেট্রিক টন চাল জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, সরকারি তালিকাভুক্ত তিনটি পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাড়িতে এসব চালবোঝাই করে চট্টগ্রামের হালিশহর সিএসডি থেকে
খাগড়াছড়ির তবলছড়ি ও দীঘিনালা এলএসডি উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার রাতেই। সেখানে খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার ইয়াকুবের গাড়িতে গত ২৪ আগস্ট ১৫ মেট্রিক টন চাল ইস্যু করা হয়। চালভর্তি ট্রাকটি যাওয়ার কথা ছিল খাগড়াছড়ির তবলছড়ি এলএসডিতে। খাদ্য অধিদপ্তরের যার ভি-ইনভয়েস ছিল ৩৮৪৭৯৬৯।
একইদিনে খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মো. হানিফের গাড়িতে ১৫ মেট্রিক টন চাল ইস্যু করা হয়। সেটি যাওয়ার কথা ছিল খাগড়াছড়ি এলএসডি গোডােউনে। যার ভি-ইনভয়েস ছিল ৩৮৪৭৯৬৪ এবং একই সময়ে আরেকটি ঠিকাদারের পেছানো স্বাক্ষরে ১৫ মেট্রিকটন চাল খাগড়াছড়ি দীঘিনালা যাওয়ার কথা ছিল। খাদ্য অধিদপ্তরের যার ভি-ইনভয়েস ছিল ৩৮৪৭৯৩১।
জানা গেছে, ফারুক ট্রেডিং সরকারি চাল চুরি এটি প্রথম নয়, প্রতিদিন পাবর্ত্য অঞ্চলের পাঠানোর সরকারি চাল ফারুক ট্রেডিংয়ে নামাচ্ছে খাদ্য অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা ও পরিবহন ঠিকাদারের একটি চোরচক্র সিন্ডিকেট। প্রতিদিন কম টাকায় এসব চাল কিনছে ফারুক ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠানটি। পরে সরকারি বস্তা পরিবর্তন করে এসব চোরাই চাল বাজারে বিক্রি করা হয়।
চাল চুরির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফারুক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ফারুককে একাধিবার মুঠোফোনে কল করলেও সাড়া মেলেনি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাইল আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, শুক্রবার ভোরে খবর পেয়ে সরকারি চালসহ তিনটি ট্রাক আটক করা হয়েছে। বিষয়টি সত্যতা জানতে খাগড়াছড়ির সংশ্লিষ্ট জায়গায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমএ/ডিজে