চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে নদী-খাল দখল করে স্থাপনা করলে ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
সোমবার(১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরের চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স চত্বরে আয়োজিত করমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রামের যে জলাবদ্ধতা তা নিরসনে সরকার প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তবে কোনো প্রকল্পই সফল হবে না, যদি না জনগণ সচেতন আচরণ না করেন। খাল-নালা দখল করার কারণে পানি প্রবাহের স্বাভাবিক পথ না থাকলে কেবল প্রকল্প করে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, নগরীতে অনেকে পানি উঠলে অস্থির হয়ে যান। আবার পানি নামলে ভুলে যান জলাবদ্ধতার কষ্টের কথা ভুলে যান এবং খাল-নালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন। প্রকল্পের কাজ নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে তা ভেঙে দেওয়া হবে।’
এছাড়া কর সহনীয় করতে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে মেয়র বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখলাম গৃহকরের ভ্যালুয়েশন নিয়ে জনগণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। দায়িত্ব নিয়েই জনগণকে করের বোঝা থেকে মুক্তি দিতে প্রতিটি ট্যাক্স সার্কেলে গণশুনানির আয়োজন করেছি। জনগণের বক্তব্য শুনে, যাচাই করে আপিল করা করদাতাদের গৃহকর সহনশীল পর্যায়ে এনে দিয়েছি। আমার দরজা নাগরিকদের জন্য সবসময় খোলা। সারাদিন অফিসের কাজ সামলে আবার প্রতিদিন সন্ধ্যার পর নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে তাদের বক্তব্য শুনি। যে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, মেয়র পদে বসে তাদের ভুলে যাইনি।’
করমেলার উদ্বোধকের বক্তব্যে সংসদ সদস্য মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘বর্তমান জলাবদ্ধতার জন্য সিডিএরও দোষ নাই, সিটি কর্পোরেশনেরও দোষ নাই। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা মূলত প্রকৃতির প্রতিশোধ। আগে চট্টগ্রামে ৭০টি খাল ছিল। খোলা জমি-মাঠ ছিল। প্রায় সব বেদখল হয়ে গেছে। ২০০ ফুট চওড়া খাল দখল হতে হতে ২০ ফুটে পরিণত হয়েছে।’
‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমার প্রস্তাব হলো যেসব রাস্তা কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত গেছে সেসব রাস্তার নীচে ভূ-গর্ভস্থ নালা করে দিতে হবে এবং নালার মুখে সিলট্র্যারপ ও গার্বেজ ট্র্যাধপ করে দিতে হবে। কারণ কর্ণফুলীতে প্লাস্টিক-পলিথিনের এমন অবস্থা, ড্রেজিং করা যাচ্ছে না। আমাদের ভুললে চলবে না, কর্ণফুলীর সঙ্গে মিশে আছে চট্টগ্রামের অস্তিত্ব।’
সভাপতির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কর সিটি কর্পোরেশনের জীবনীশক্তি। রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা সিটি কর্পোরেশনের অ্যাম্বেসেডরের ভূমিকা পালন করেন। এজন্য কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের সংবেদনশীল হতে হবে। কারণ এই রাজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করছে চট্টগ্রামের উন্নয়ন।’
জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত করমেলায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর গাজী মোহাম্মদ শফিউল আজিম, শাহেদ ইকবাল বাবু, আবদুস সালাম মাসুম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামশুল তাবরিজ, কর কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
বিএস/ডিজে