চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) বর্তমান সহ সভাপতি লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী আসন্ন সিজেকেএস কার্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে ক্লাব প্রতিনিধি হওয়ার জন্য ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন।
সিজেকেএস-এর কার্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে সিজেকেএস অধিভুক্ত প্রত্যেকটি ক্লাব ও সংস্থা থেকে প্রতিনিধির নাম পাঠানোর জন্য চিঠি প্রেরণ করা হয়।
বরাবরের মতো এবারও নির্বাচনের আগে প্রতিনিধিদের নাম চেয়ে গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে চিঠি পাঠানো হয়।
ক্রীড়াঙ্গনে নানান কাণ্ডে বিতর্কিত লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদারবাড়ি মুক্তকণ্ঠের প্রতিনিধি হিসেবে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করে সিজেকেএসকে চিঠি প্রেরণ করেন।
তিনি গত নির্বাচনে মাদারবাড়ী মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০২১ সালে মাদারবাড়ি মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের পরিচালনা পরিষদ পরিবর্তন হয়ে মো. ইমতিয়াজ বাবলা সভাপতি এবং মো. হারুন অর রশিদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। যদিও একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সমাজসেবা দপ্তর মাদারবাড়ি মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করে রাখে।
স্থগিত রাখার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে ফয়েজুর রহমান ও আশরাফুজ্জামানকে হাত করে নিজের নাম রাখার জন্য তাদের স্বাক্ষরে সিজেকেএসে নাম জমা দেন। যেখানে প্রতিনিধি হিসেবে দিদারের নামের সাথে সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদককেও রাখা হয়।
এসব বিষয় মাদারবাড়ি মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের নির্বাচিত কমিটির নজরে আসলে তারা সিজেকেএস বরাবর তাদের নাম বাতিলের লিখিত আবেদন জানান। সিজেকেএস থেকে সাড়া না পেয়ে তারা আদালতের দ্বারস্থ হন।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন স্বাক্ষরে এক আদেশে উল্লেখ করেন, “বিগত ১৪/১০/২৩ খ্রী. তারিখ ১ ও ২ নং বিবাদীর স্বাক্ষর মাধ্যমে মাদারবাড়ী মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের পক্ষে লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আশরাফ ও এম এ মুছা বাবুলকে ক্লাব প্রতিনিধি হিসেবে সিজেকেএস বরাবর নাম প্রেরণ সঠিক হয় নাই।”
মাদারবাড়ী মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনর রশীদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, “আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পরও সমাজ সেবা দপ্তরের নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যক্রম বন্ধ রাখলেও প্রাক্তন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে হাত করে দিদারুল আলম নিজের কাউন্সিলরশিপ বাঁচিয়ে রাখার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।”
তিনি আরও বলেন, “সমাজ সেবা দপ্তরের আইনতো সবার জন্য সমান। আমরা বর্তমান কমিটি যেখানে কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত আছি সেখানে কিভাবে সাবেক কমিটি বেআইনিভাবে সংগঠনের নাম ব্যবহার করতে পারে?”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয় হলে দিদারুল আলম দিদার বলেন, “আদালতের কোন আদেশই সিজেকেএস মানতে বাধ্য নন। কারণ মামলার বাদী মো. হারুণ অর রশিদ মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের দায়িত্বে নেই।”
তিনি আরও বলেন, “২০০৯ সালে বাকলিয়া ক্রীড়া সংস্থা নামে একটি ক্লাব কিনে নেয় মাদারবাড়ি মুক্তকন্ঠ ক্লাব। এই ক্লাবের দুটি পার্ট রয়েছে। একটি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, অন্যটি সিজেকেএস এর অনুমোদিত খেলাধুলার ক্লাব। তবে খেলাধুলার ক্লাবটি সমাজসেবার কোন অনুমোদিত কিছু না। তাই সমাজসেবার কোন আদেশ এই খেলাধুলার ক্লাবের উপর বর্তাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “তিনজন প্রতিনিধির নাম প্রেরণ করার শেষ সময়ছিল ১৪ অক্টোবর। তালিকাও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। হারুণ মুক্তকণ্ঠ ক্লাবের দায়িত্বে না থাকায় তাকে সিজেকেএস কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২৩ উপলক্ষে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি।”
এদিকে আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৭ টার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয় সুরাহা হওয়ার কথা রয়েছে।