চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’স লেক থেকে কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে চকবাজারের একটি হোটেলে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এই রায় দেন।
ট্রাইব্যুনাল পিপি খন্দকার আরিফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘চট্টগ্রামে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার মামলায় পুলিশ পরিদর্শকের (বরখাস্ত) মিজানুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১২ জুলাই নগরীর ফয়’স লেক এলাকা থেকে ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে তুলে নিয়ে যান ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান। এরপর মেয়েটিকে নগরীর চকবাজারে একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় ওসি মিজান।
এই ঘটনায় ওই বছরের ১৬ জুলাই মেয়েটির বাবা হুমায়ন কবির বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় ওসি মিজানসহ তিনজনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেন। বাকি দুই আসামি হোটেলের কর্মচারী। তবে মামলার অন্য দুই আসামি শামসুদ্দিন মজুমদার ও তাজুল ইসলামের বিচার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ থাকায় শুধুমাত্র মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিচার সম্পন্ন হয়েছে।
ওই ঘটনার সময় মিজানুর একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে পাঁচ দিনের ছুটিতে চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে মিজানুরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর আগে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন মিজানুর।
ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিন মাস পলাতক থাকা ওসি মিজানুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। হাইকোর্টের আদেশে ২০১২ সালের জুলাই মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ওই ঘটনায় তিনি পুলিশের চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তও হন।
আরএস/ডিজে