চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতির আবার অবনতি, একলাফে মৃত্যু বেড়ে ১১

একদিনের ব্যবধানে আবারও পাল্টে গেল চট্টগ্রামের করোনাচিত্র। আগেরদিন যেখানে করোনা শনাক্তের হার কমে এসেছিল ১২-এর ঘরে সেখানে এদিন আবার সেটি বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৯-এর ঘরে। তবে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে ১১ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৪ জন নগরের বাসিন্দা, বাকি ৭ জন বিভিন্ন উপজেলার। একই সময়ে নতুন করে ৪৩৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৫১৬ জন। মোট শনাক্তের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরেরই ৭০ হাজার ৫৪ জন। বাকি ২৫ হাজার ৪৬২ জন বিভিন্ন উপজেলার। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫৩ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ৪৮৬ জন।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, সোমবার করোনায় মারা গিয়েছিলেন ৭ জন, শনাক্ত হয়েছিল ২৩০।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামের ১০টি ও কক্সবাজারের একটি ল্যাবে ২ হাজার ২৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরেরই ২৭৯ জন। বাকিরা বিভিন্ন উপজেলার। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

উপজেলায় শনাক্ত ১৫৯ জনের মধ্যে রাউজান উপজেলায় সর্বাধিক ৪৯ জন, সীতাকুণ্ডে ৩১ জন, বোয়ালখালীতে ২১ জন, আনোয়ারায় ১৫ জন, বাঁশখালীতে ১১ জন, হাটহাজারীতে ৬ জন, পটিয়ায় ৫ জন, চন্দনাইশে ৪ জন, সাতকানিয়া ও ফটিকছড়িতে ৩ জন করে, মিরসরাইয়ে ২ এবং লোহাগাড়ায় ১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

ল্যাবভিত্তিক ফলাফলে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে করোনার বিষ পাওয়া যায় ৮৪ জনের দেহে। যাদের ৩৩ জন নগরের এবং ৫১ জন বিভিন্ন উপজেলার। ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৬৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১২৮ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৯৪ জন নগরের এবং ৩৪ জন বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৪৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ৫৫ জন এবং উপজেলার ৩২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ১০ জনকে করোনা পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এদের মধ্যে ৮ জন নগরের ও ২ জন উপজেলার বাসিন্দা। এছাড়া, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে উপজেলার ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

অন্যদিকে, এদিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে ১৯৭ জনের এন্টিজেন টেস্ট করানো হয়। এতে ৩০ জনকে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে জানানো হয়। যাদের মধ্যে ১৪ জন মহানগরের এবং ১৬ জন বিভিন্ন উপজেলার।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ৮ জন ও উপজেলার ২ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নগরীর বেসরকারি ল্যাবগুলোর মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় কোন নমুনা পরীক্ষা হয়নি। শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ২১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৭ জনকে করোনারোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। যাদের মধ্যে ২৩ জন নগরের, ৪ জন বিভিন্ন উপজেলার। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ৩ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৪ জনের দেহে করোনার বিষ পাওয়া গেছে। যাদের ২৬ জনই নগরের, বাকি ৮ জন উপজেলার।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!