চট্টগ্রামে করোনার রেডজোনে কোতোয়ালী পাঁচলাইশ খুলশী

তালিকায় পতেঙ্গা হালিশহরও

হটস্পট নারায়ণগঞ্জের পর করোনার দ্বিতীয় উপকেন্দ্র এখন চট্টগ্রাম। হুড়হুড়িয়ে বাড়ছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। চট্টগ্রামের নগর এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছে। চট্টগ্রামের মোট আক্রান্তের ৭৭ শতাংশই নগরের বিভিন্ন এলাকায় বাস করেন। বাকি ২৩ শতাংশ বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রামের ১৬ থানার মধ্যে রেড জোনের তালিকায় উঠেছে কোতোয়ালী এলাকার নাম। নগরীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে কোতোয়ালী থানা এলাকায়। এর পরের অবস্থানে রয়েছে পাঁচলাইশ ও তৃতীয় রেড জোনে রয়েছে খুলশী এলাকা। এছাড়াও ঠিকানা লুকিয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যাও নগরে কম নয়।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের রেড জোনের পরিসংখ্যানের তালিকায় দেখা যায় এ পর্যন্ত কোতোয়ালী থানা এলাকায় ৩২৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা নগরীর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হওয়া এলাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছে পাঁচলাইশ থানা এলাকায়। সেখানে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ২১৫ জন। তৃতীয় সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হল খুলশী থানা এলাকায়। এ পর্যন্ত খুলশী থানার বিভিন্ন এলাকার ১৮৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এদিকে পতেঙ্গায় ১৬৮ জন ও হালিশহরে ১৬৭ জনসহ পার্শ্ববর্তী ডবলমুরিং থানা এলাকার ১৪১ জন আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এ পর্যন্ত বন্দর থানার বিভিন্ন এলাকার ১২৩ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। পাহাড়তলী থানার বিভিন্ন এলাকার ১১৪ জন ও ইপিজেড থানা এলাকার ১১২ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। চকবাজার ও আকবরশাহ থানা এলাকায় ১১১ জন করে ২২২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। চান্দগাঁও থানা এলাকায় ১০৬ জন এবং বাকলিয়া ও বায়েজিদ থানা এলাকায় ৯৯ জন করে ১৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়।

তবে তুলনামূলক কম সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে সদরঘাট ও কর্ণফুলী থানা এলাকায়। এ পর্যন্ত সদরঘাট থানার বিভিন্ন এলাকায় ৮৬ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে এবং কর্ণফুলী থানা এলাকায় শনাক্ত হয়েছে ৫৬ জন।

এদিকে নগরে করোনা আক্রান্তের তালিকায় রয়েছে ৮৫ জন— যাদের কোনো ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘রোগী বেশি আছে এমন এলাকাকে রেড জোনে রাখা হয়েছে। আমরা ও প্রশাসন মিলে এ তালিকাটা রেডি করেছি। রেড জোনের তালিকায় প্রথমে কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ, খুলশী, হালিশহর এসব এলাকা রয়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকা থেকে আরেকটা রেড জোন তালিকা করা হবে। এছাড়া ঠিকানা অসম্পূর্ণ ৮৫ জন রয়েছেন। তাদের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে চমেক বা রেলওয়ে হাসপাতাল বা অন্য কোনো হাসপাতালের নামে। সেখানে যে মোবাইল নম্বর দিয়েছে তাও বন্ধ পাওয়া গেছে। দেখা গেল কেউ হয়ত নগরের এক জায়গায় থাকে কিন্তু ঠিকানা ভুল দিয়ে বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাই তাদের খুঁজে বের করা যায়নি।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২৬ মার্চ। প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ৩ এপ্রিল। নমুনা পরীক্ষা শুরুর ঠিক ১ মাস পর ২৬ এপ্রিল মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩ জন। আর তার ঠিক ১ মাস ৫ দিনের মাথায় সোমবার (১ জুন) পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৫১ জনে। এরমধ্যে মহানগরীর ২ হাজার ৩৮১ জন।

এসআর/এসএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!