চট্টগ্রামে আরএফপির ‘ফেইথ পারসপেকটিভ অন ক্লাইমেট অ্যান্ড পিস’ শীর্ষক সংলাপ
সকল ধর্ম ও বিশ্বাস মানবতা ও প্রকৃতির সামঞ্জস্যে গুরুত্ব দেয়
রিলিজিয়নস ফর পিস (আরএফপি) বাংলাদেশ চ্যাপ্টার আয়োজিত সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, “বিশ্বের সকল ধর্ম-বিশ্বাস মানবতা ও প্রকৃতির মধ্যে সামঞ্জস্য বাজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেয় এবং পৃথিবীকে এক পবিত্র আমানত হিসেবে দেখে। মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন শুধু পরিবেশের জন্যই নয়, বরং বৈশ্বিক শান্তির জন্যও হুমকি স্বরূপ। এটি সম্পদের সংকট সৃষ্টি করে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়িয়ে তোলে এবং সংঘাত ও বাস্তুচ্যুতির কারণ হয়।”
“ফেইথ পারসপেকটিভ অন ক্লাইমেট অ্যান্ড পিস” শীর্ষক এ সংলাপ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর এমএম আলী রোডে ‘গরবা’ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়ান কনফারেন্স অভ্ রিলিজিয়নস ফর পিস (এসিআরপি) এর পৃষ্ঠপোষকতায় ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্টের আওতায় অনুষ্ঠিত এ সংলাপে প্রতিপাদ্য তুলে ধরে মূল বক্তৃতা উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এর রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. রাশিদা খানম।
আর এফ পি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ও চবি ইংরেজী বিভাগের প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. মাছুম আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন চবি হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর রনজিৎ কুমার দে, সংগঠনের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ও চবি দর্শন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এন এইচ এম আবু বকর, বিশিষ্ট গবেষক ড. সুচরিত বসু নিয়োগী, ভাইস প্রিন্সিপাল দেবপ্রিয় বড়ুয়া, কাফকো কর্মকর্তা ও কবি বিশ্বজিৎ বড়ুয়া এবং সাংবাদিক সুমন বড়ুয়া প্রমুখ।
সংলাপের মূল আলোচনায় প্রফেসর ড. রাশিদা খানম জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃতির সুরক্ষা একটি নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দায়িত্ব। ধর্ম আমাদের মানবিকতা, দয়া ও ন্যায়পরায়নতার শিক্ষা দেয়- যা টেকসই জীবনযাপন ও সহযোগিতার অনুপ্রেরণা যোগায়। জলাবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি, ন্যায্য নীতি প্রণয়নে সহায়তা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সংলাপের মাধ্যমে ধর্মীয় নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।”
ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, দাওবাদ, জৈনবাদসহ অপরাপর ধর্ম ও দর্শনের নির্দেশনা তুলে ধরে ড. রাশিদা আরো বলেন, “ধর্মীয় নেতারা ন্যায়বিচার ও টেকসই উন্নয়ন নীতির প্রচারের জন্য নীতিনির্ধারকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন। আন্তঃধর্মীয় সহযোগিতা ও সংলাপের মাধ্যমে জলবায়ু সংকটের সমাধানে ঐক্য গড়ে তোলো সম্ভব, যা শেষ পর্যন্ত শান্তি ও পরিবেশ সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।”
সংলাপে আরও অংশগ্রহণ করেন আরএফপি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক ফারুক তাহের, নির্বাহী সদস্য রেভারেন্ট কাঞ্চন বড়ুয়া, তেরেসা আইরিন, শান্তিকর্মী জয়মালা বড়ুয়া, এলি রানী বড়ুয়া, শর্মিষ্ঠা তালুকদার, সংস্কৃতিকর্মী উম্মে সালমা নিঝুমসহ শান্তিকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।