চট্টগ্রামের ৪ জায়গা হঠাৎ করোনার ‘হটস্পট’, সংক্রমণ বাড়ছে তুমুল গতিতে

নগরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ৪ উপজেলা

চট্টগ্রামের ১১ উপজেলায় সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় ৬৯ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৫৭ জনই উত্তর চট্টগ্রামের ৪ উপজেলার। করোনা শনাক্তের হিসেবে এই দিন চট্টগ্রাম মহানগরে করোনা পজিটিভ হওয়া রোগীর সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে উপজেলা পর্যায়ে করোনা পজিটিভ শনাক্তের এই সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে ধরে উদ্বেগজনক হারে উপজেলা পর্যায়ে সংক্রমণ বাড়ছে— এমনটাই জানা গেছে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে। এর মধ্যে উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বেশি।

শহরের সাথে লাগোয়া হওয়ায় শহরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও বিভিন্ন কারণে এসব উপজেলায় সারাদেশের মানুষের অবাধ যাতায়াতের কারণেই দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় ফটিকছড়িতে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৩০ জন, হাটহাজারীতে ৪ জন, সীতাকুণ্ডে ১৩ জন ও মিরসরাইয়ে ১০ জন। এর আগের দুই দিনে ফটিকছড়িতে পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৩১ জন, হাটহাজারীতে ৩০ জন, সীতাকুন্ডে ২৪ জন ও মিরসরাইয়ে ১৪ জন।

হঠাৎ করে চট্টগ্রাম শহরের কাছাকাছি এই চার উপজেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘উপজেলাগুলোর মধ্যে ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে বেশি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছে গত কিছুদিন ধরে। ক্ষেত্রবিশেষে শনাক্তের সংখ্যা ওঠানামা করলেও এসব উপজেলায় যে সংক্রমণ একটু বেশিই হচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে।’

এই ৪ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে ফটিকছড়িতে। গত তিন দিনে প্রতিদিনই উর্ধ্বমুখী হারে এই উপজেলায় বেড়েছে করোনা পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা। এছাড়া চট্টগ্রামে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের যে দুজন রোগী পাওয়া গিয়েছিল তাদেরও একজন এই উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন।

ফটিকছড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমরুল কায়সার বলেন, ‘গত বেশ কিছুদিন ধরে এখানে অনেক করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের উপজেলায় ২০ শয্যার একটা হাসপাতাল আছে কোভিড ডেডিকেটেড। যার প্রায় সব সিটেই রোগী আছে। কারও উপসর্গ বেশি থাকলে আমরা শহরে পাঠাচ্ছি।’

হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইএমও ডা. খালেদ বলেন, ‘গত সপ্তাহে একদিনে আমরা ৩৪টি নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। এর মধ্যে ২১ জনই পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ ৬১ শতাংশের বেশি হচ্ছে পজিটিভ শনাক্তের হার। তবে উচ্চমাত্রার সংক্রমণ হলেও এখানে মৃত্যুহার কম।’

চট্টগ্রামের এই চার উপজেলায় হঠাৎ সংক্রমণ বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, এই উপজেলাগুলো শহরের সাথে লাগোয়া হওয়ার ফলে শহরে নিয়মিত যাতায়াত আছে এসব এলাকার মানুষের। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার মানুষের আসা-যাওয়া বেশি এই চার উপজেলায়। উত্তর বঙ্গ থেকেও এসব এলাকায় প্রচুর লোকজন কাজ করতে আসে।’

তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ রোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং এটা স্থানীয় পর্যায় থেকেই নিশ্চিত করতে হবে।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!