চট্টগ্রামের ১৫ বাবুর্চির হাতে ২৮ মণ মাংসের মেজবান ভাসানচরে

চট্টগ্রাম থেকে ১৫ জন বাবুর্চি নিয়ে গিয়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে নিয়ে পিকনিকের আয়োজন করা হল নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই মেজবানিতে মাংস রান্না হয়েছে ২৮ মণ।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দিনব্যাপী ভাসানচরের ৫ নম্বর ক্লাস্টারের পাশে খেলার মাঠে রোহিঙ্গাদের জন্য এ বিশেষ পিকনিক অনুষ্ঠিত হয়। পিকনিক ছাড়াও এতে ছিল বিশেষ ভোজ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পুরো আয়োজনটি হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায়।

চট্টগ্রামের ১৫ বাবুর্চির হাতে ২৮ মণ মাংসের মেজবান ভাসানচরে 1

জানা গেছে, পিকনিক উপলক্ষে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানির রান্না করার জন্য চট্টগ্রাম থেকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় ১৫ জন অভিজ্ঞ বাবুর্চি। ১০ হাজার কেজি (১০ টন) চাল, ২০ মণ ডাল ও ২৮ মণ মাংস রান্না করেন এই বাবুর্চিরা। ৩ হাজার ৭৫২ জন রোহিঙ্গাসহ ৪ হাজার লোকের জন্য দুপুরের এই খাবার তৈরি করা হয়।

এর আগে সকালে রোহিঙ্গা শিশুদের অংশগ্রহণে ছিল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। যাতে শিশুরা দৌড়, মোরগের লড়াই, রশিটানাটানিসহ নানান প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নারীদের বালিশ খেলা ছিল চোখে পড়ার মত। এ জন্য মাঠের মাঝখানে বেশ কিছু চেয়ার দিয়ে তৈরি করা হয় খেলার প্যান্ডেল।

মার্বেল দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম হয় উর্মি নামের ৯ বছরের এক রোহিঙ্গা শিশু। ১নং ক্লাস্টারের ৮ নম্বর বাসার বাসিন্দা উর্মির ভাই রাকিব (১৫) জানায়, তাদের কাছে দিনটিকে ঈদের মতোই মনে হয়েছে।

চট্টগ্রামের ১৫ বাবুর্চির হাতে ২৮ মণ মাংসের মেজবান ভাসানচরে 2

অন্যদিকে বালিশ খেলায় অংশ নিতে আসেন মিনু আরা বেগম ( ৩০)। ভাসানচরের ১০ নং ক্লাস্টারের ১৩ নম্বর বাসার বাসিন্দা মিনু আরা জানান, ‘কাজ না থাকায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে। আজকের এই আয়োজন আমাদের সকলকে অনেক আনন্দ দিয়েছে।’

বিকালে ভাসানচরের রোহিঙ্গা মিউজিক ক্লাবের শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে রোহিঙ্গাদের জীবনমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে রোহিঙ্গা শিল্পীরা বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন। এ সময় মাঠের চারপাশে অবস্থান করা নৌ-বাহিনী, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা শিল্পীদের হাত তালি দিয়ে অভিনন্দন জানান।

মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা ৬৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ— ভাসানচর। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সম্প্রতি সেখানে ভাসানচর থানাও স্থাপিত হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!