বিশেষ প্রতিনিধি : দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ আজ রবিবার পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপন করছেন। সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদগণ সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে অন্যান্য বছরের মতো এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছেন। দরবার শরীফের মুরিদরা তারাবির নামাজ আদায় এবং রোজা পালনও একদিন আগে থেকে শুরু করেছিলেন। ফলে শনিবার তাদের ২৯টি রোজা পালন সম্পন্ন হয়েছে।
মির্জাখীল দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা শাহ জাঁহাগীর হযরত শেখুল আরেফীন (কুঃ ছিঃ আঃ) প্রায় দুই শতাধিক বছর পূর্বে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে একদিন আগে তারাবির নামাজ আদায়, রোজা পালন ও ঈদ উদযাপনের এই নিয়ম চালু করেছিলেন। এরপর থেকে তাঁর খলিফা ও মুরিদগণ একই নিয়মে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করে আসছেন। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের এসব গ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মির্জাখীল দরবার শরীফের অনেক মুরিদ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য শনিবার মির্জাখীল এলাকায় চলে এসেছেন। আজ সকাল ১০টার দিকে দরবার শরীফের বর্তমান পীর শাহ জাঁহাগীর হযরত তাজুল আরেফীনের বড় ছেলে ড. হযরত মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান ঈদের নামাজ পড়াবেন বলে জানা গেছে।
দরবার শরীফ সূত্রমতে সাতকানিয়ার মির্জাখীল, চরতি, সুইপুরা, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, পুরানগড়, গাটিয়াডেঙ্গা, মার্দাশা, রূপনগর, আলীনগর, সাতকানিয়া, চন্দনাইশের বরকল, কেশুয়া, চর বরমা, হাশিমপুর, দোহাজারী, হাছনদন্ডী, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, চন্দনাইশ সদর, কাঞ্চননগর, পূর্ব হারালা, বাঁশখালীর পুঁইছড়ি, চাম্বল, ডোংরা, কালিপুর, শেখেরখীল, ছনুয়া, ভাদালিয়া, বড়ঘোনা, লোহাগাড়ার চুনতি, আধুনগর, চাকফিরানী, আমিরাবাদ, পুঁটিবিলা, কলাউজান, বড়হাতিয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, খাসহামা, কাটাখালী, বোয়ালখালী ও পুটিয়ার কয়েকটি গ্রামসহ দক্ষিন চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ আজ ঈদ উদযাপন করবেন। যেসব এলাকায় মির্জাখীল দরবার শরীফের অধিক সংখ্যক মুরিদ রয়েছে সেসব এলাকায় পৃথকভাবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আর যেখানে মুরিদ সংখ্যা কম তারা মির্জাখীল দরবার শরীফ এলাকায় গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এছাড়াও চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, কক্সবাজারের টেকনাফ, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, বান্দরবানের লামা, রাঙ্গামাটি, ফেনী, নোয়াখালী, হাতিয়া, কুমিলহ্মা, সিলেট, হবিগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকার মোহাম্মদপুর, খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, নাটোর, রাজশাহী, রংপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, ফরিদপুর ও নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদগণ একই দিনে ঈদ উদযাপন করবেন।
মির্জাখীল দরবার শরীফ এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন ও খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা দরবার শরীফের কিছু অনুসারী ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মির্জাখীল এলাকায় চলে এসেছেন। কিছু মুরিদ ঈদের দিন সকালে পৌঁছাবেন। তারা দরবার শরীফে ঈদের নামাজ আদায় করে আবার ফিরে যাবেন।
মির্জাখীল দরবার শরীফের মুখপাত্র ও মির্জাখীল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শি ক বজলুল করিম চৌধুরী জানান, মির্জাখীলের প্রায় পুরো গ্রামের মানুষ আজ ঈদ পালন করবেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কিছু মুরিদ ইতিমধ্যে দরবার শরীফ এলাকায় চলে এসেছেন।
এদিকে সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারও আজ রবিবার ঈদুল ফিতর পালন করবেন। এ লক্ষ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহ প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় সকাল সাড়ে আটটায় সীতাকুণ্ডের রহমতের পাড়া গ্রামে জাহাঁগিরিয়া জামে মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের নামাজ পড়াবেন মসজিদের ইমাম মাওলানা আলী আহম্মদ।