চট্টগ্রামের মামলায় ঢাকায় গ্রেপ্তার চিন্ময় প্রভু

চট্টগ্রামের মামলায় ঢাকায় গ্রেপ্তার হলেন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে দায়ের করা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা গেছে, ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসার উদ্দেশে বিমানবন্দর আসেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ৫ আগস্টের পর দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীর নামে কয়েক দফা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সমাবেশের বেশি আলোচনায় আসেন। ওই সমাবেশে হিন্দুদের মঠ-মন্দিরে হামলা বাড়িঘরে লুট, অগ্নিসংযোগসহ নানা অভিযোগ করেন বক্তারা।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তিনি চিন্ময় প্রভু নামে পরিচিত।

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে ওই মামলা দায়ের হয়।

এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ। মো. ফিরোজ খান নামে এক বিএনপি নেতা বাদী হয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পরে বিএনপি ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

মামলার আসামিরা হলেন— ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (৩৮), চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪), নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু(৩৮), ডা. কথক দাশ (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাশ (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮) এবং হৃদয় দাস (২৫)। একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট গণঅভুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা নিউমার্কেট মোড়ে একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। গত ২৫ অক্টোবর লালদিঘী মোড়েসমাবেশের দিন ঐ পতাকার ওপর সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে স্থাপন করে দেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার সামিল।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে আসামিরা দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার রাষ্ট্রদোহ কাজে লিপ্ত আছে। দণ্ডবিধির ১২০(খ), ১২৪(ক), ১৫৩(ক), ১০৯ ও ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়।