চট্টগ্রামের মাটিতে টেস্ট আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হচ্ছে সৈকতের

১৯ বছর পর দেশের মাটিতে স্বদেশি আম্পায়ার

আজ থেকে ১৯ বছর আগে ২০০২ সালে সর্বশেষ দেশের মাটিতে দেখা মিলেছিল দেশের একজন আম্পায়ারের যিনি ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত ভার্সন টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করছেন। এরপর আইসিসির নিয়ম বদলে যাওয়ায় দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে আর দেখা মিলেনি স্বদেশি কোন আম্পায়ারের। মহামারী করোনা এক্ষেত্রে ত্রাতা হিসেবে সুযোগ করে দিল বাংলাদেশি আম্পায়ারের আবারও মাঠে নামার। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্ট আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হতে যাচ্ছে শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের।

করোনাকালে দেশের মাটিতে শুধু ওডিআই, টি-২০ই নয়, টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করবে যার যার দেশের সেরা আম্পায়ার। এই নিয়মেই চলছে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজগুলো। ফলে আইসিসি’র এলিট প্যানেলে না থেকেও দীর্ঘদিন আইসিসি ইমার্জিং প্যানেলে থাকা শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত এবং আইসিসি প্যানেলে থাকা মাসুদুর রহমান মুকুল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজে দুই এন্ডে আম্পায়ারিং করবেন বলে ধরে নিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স অ্যান্ড স্কোরার্স এসোসিয়েশন। তবে এলিট প্যানেলে বাংলাদেশের কোন আম্পায়ার না থাকায় দেশের মাটিতে এই প্রথম দুইপ্রান্তে দুই স্বদেশি আম্পায়ার আম্পায়ারিংয়ের সুযোগ পাচ্ছেন না। আসন্ন সিরিজের জন্য আইসিসি ইংলিশ এলিট প্যানেল আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থকে পাঠিয়েছে। সঙ্গে ডিআরএস প্রযুক্তির জন্য দুই টেকনিশিয়ানকে পাঠাচ্ছে আইসিসি।

টেস্টে এক প্রান্তে আম্পায়ারিং করবেন ইংলিশ আম্পায়ার ইলিংওয়ার্থ। অন্য পান্তে অবশ্য আম্পায়ারিংয়ের সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স এসোসিশনের সাধারন সম্পাদক সয়লাব হোসেন টুটুল-‌ ‘ টেস্টে দুই এন্ডে আমাদের দুই আম্পায়ার আম্পায়ারিং করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলাম। তবে এলিট প্যানেলের কোন আম্পায়ার না থাকায় ইমার্জিং প্যানেল আম্পায়ার সৈকত দুই টেস্টে এক এন্ডে আম্পায়ারিং করবেন বলে জানতে পেরেছি। মুকুল থাকবেন রিজার্ভ আম্পায়ার। গাজী সোহেল থাকবেন টিভি আম্পায়ারিংয়ে।’

২০০২ সাল পর্যন্ত টেস্টে এক প্রান্তে স্বাগতিক দেশের আম্পায়ারের আম্পারিংয়ের বিধান থাকায় সে সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩ জন আম্পায়ার ৪টি মাত্র টেস্টে ফিল্ড আম্পারিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট এবং ২০০২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একটি টেস্টে আম্পায়ারিং করেছেন আক্তারউদ্দিন শাহীন। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে আম্পায়ারিং করেছেন শওকতুর রহমান চিনু। ২০০২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একটি টেস্টে করেছেন আম্পায়ারিং মাহবুবুর রহমান। নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে টেস্টে নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে করেছেন সাবেক এই বাঁ হাতি স্পিনার আম্পায়ারিং। দেশের মাটিতে ১৯ বছর পর টেস্ট ম্যাচে আম্পায়ারিং করবেন একজন বাংলাদেশী আম্পায়ার।

৪৪ বছর বয়সী সৈকত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করছেন সেই ২০১০ সাল থেকে ইতোমধ্যে ৪২টি ওয়ানডে ম্যাচ এবং ৩১টি টি-২০ ম্যাচ করেছেন আম্পায়ারিং। এবার টেস্ট আম্পায়ারিংয়ের অভিষেকের সামনে দাঁড়িয়ে সাবেক এই জাতীয় ক্রিকেটার। আইসিসির বিধিনিষেধের (কোড অব কন্ডাক্ট) কারণে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি সৈকত। তবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা সৈকত নিজের যোগ্যতা ও সুযোগ পাওয়া টেস্টে ভালো পারফরম্যান্স করে জায়গা করে নিবেন আইসিসির আম্পায়ারদের সর্বোচ্চ স্তর এলিট প্যানেলে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!