চট্টগ্রামের বড় ঋণখেলাপিদের খুঁজে পায় না পুলিশ, আদালতে মামলার জট

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ৮০ ভাগই তামিল হয় না

আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও চট্টগ্রামের পুলিশ বেশিরভাগ আসামিকেই গ্রেপ্তার করছে না। চলতি বছরেই ঋণখেলাপের দায়ে ১ হাজার ৪০০টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত। অথচ পরোয়ানার এই আসামিরা বরাবরই থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে তৈরি হচ্ছে মামলার জট।

দিনের পর দিন এমন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের শীর্ষ ঋণখেলাপিদের গ্রেপ্তারে চট্টগ্রাম মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত।

সোমবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের পর্যবেক্ষণে এসেছে, শীর্ষ ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে এই আদালত থেকে ইস্যুকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলো যথাসময়ে তামিল হচ্ছে না। এ কারণে দায়েরকৃত মামলা যথাসময়ে নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে ঋণখেলাপিদের গ্রেপ্তার না করায় বিশেষ আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। তাই এই আদালত থেকে ইস্যু করা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন থানাগুলোতে পেন্ডিং থাকা ওয়ারেন্টগুলো তামিল নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে এক হাজার ৩৭৩টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এই ঋণখেলাপিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হলেও অন্তত ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাজিল স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ২৩ লাখ ১৫ হাজার ২৮৭ টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে মামলা দায়ের করে পূবালী ব্যাংকের সিডিএ শাখা। ৩ মে এই মামলার সর্বশেষ শুনানিতে আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত।

অথচ ১৫ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের বোর্ড অব ডিরেক্টরস তাদের ১৩০তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাজিল স্টিল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের সুদ মওকুফ করে ৭ শতাংশ সরল সুদে ৭ বছরে ২৩টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে ৮ কোটি ৭২ লাখ ১ হাজার ৯২ টাকা পরিশোধের সুযোগ দেয়।

অর্থঋণ আদালত বলেন, অর্থঋণ আদালত আইনের ৩৮ ধারা এবং ৪৫ ধারায় ডিক্রিকৃত টাকা পরিশোধে আপোষ মীমাংসার সুযোগ রাখা হলেও ৪৫(২) ধারায় আইনে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এই মামলার পর্যবেক্ষণে অর্থঋণ আদালত বলেছেন, আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি অবস্থায় সুদ মওকুফের কোনো সুযোগ ব্যাংকের নেই।

আদেশে অর্থঋণ আদালত উল্লেখ করেন, আসামির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি ২০১১ সালেই কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তির মালিক ছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছরেও ব্যাংকের টাকা পরিশোধের কোনো ইচ্ছা তার মধ্যে দেখা যায়নি। এছাড়া আদালতের সঙ্গেও প্রতারণা করা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm