চট্টগ্রামের ছাদে দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র

৪০ মিলিয়ন ডলারে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

দেশের বৃহত্তম ছাদ সৌরবিদ্যুৎ বা রুফটপ সোলার পাওয়ার প্রকল্পের প্রথম কেন্দ্রটি চালু হল চট্টগ্রামে। ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা) এই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রকল্পে উৎপাদিত হবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ইয়াংওয়ান করপোরেশনের কেইপিজেডে স্থাপিত এই কেন্দ্রে উৎপাদিত সৌরশক্তির সুবিধা পাবে পুরো এলাকাই।

দেশের বৃহত্তম এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সংযুক্ত থাকবে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে। নেট মিটারিং সিস্টেমের আওতায় এই কেন্দ্র থেকে গ্রিডে চলে যাবে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ। ধারণা করা হচ্ছে, এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে আশেপাশের এলাকায় অন্তত ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার পরিবারে নতুন সংযোগ দিতে পারবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

তিন ধাপে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির প্রথম ধাপে স্থাপিত হল ১৬ মেগাওয়াটের একটি সৌর ফটোভোলটাইক (পিভি) বিদ্যুৎ কেন্দ্র। রোববার (২০ জুন) চট্টগ্রামের কেইপিজেডে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-গুন এবং ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও সিইও কিহাক সাঙ।

চট্টগ্রামের কেইপিজেডে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ
চট্টগ্রামের কেইপিজেডে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

দেশে এটিই প্রথম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা ইপিজেড, যেখানে উচ্চ সক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। শুধু তাই নয়, ছাদ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে এমন উচ্চ সক্ষমতা দেশের অন্য কোথাও নেই।

১৬ মেগাওয়াটের প্রথম সৌর ফটোভোলটাইক (পিভি) বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনে খরচ পড়েছে ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটির কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে আট মাস। দ্বিতীয় ধাপে স্থাপিত হবে ৪.৩ মেগাওয়াটের সৌর প্যানেল। ৪.৩ মিলিয়ন ডলায় ব্যয়ে চলতি বছরের অক্টোবর নাগাদ ওই প্যানেল স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। সবশেষ তৃতীয় ধাপে ২০ মেগাওয়াটের অপর একটি কেন্দ্র স্থাপিত হবে ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) হিসেবে। সৌরশক্তির সব প্যানেলই কোরিয়া থেকে আমদানি করা।

১৯৯৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ইয়াংওয়ান করপোরেশন চট্টগ্রামে বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল স্থাপন করে— যা কেইপিজেড নামে পরিচিত। ২০১১ সালের ২ অক্টোবর প্রথম কারখানা হিসেবে কর্ণফুলী শুজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোরিয়ান ইপিজেডে উৎপাদন শুরু করে। সেখানে বর্তমানে ৩৪টি বিশ্বমানের কারখানায় ফুটওয়্যার, পোশাক শিল্প এবং টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলায় দুই হাজার ৪৯২ একর জমির ওপর অবস্থিত দেশের প্রথম এই বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল কেইপিজেডের ৪০টি কারখানায় কাজ করছেন প্রায় ২৬ হাজার কর্মী।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!